আজকাল আর আমায় কেউ গাইতে বলেন না: জন্মদিনে কবির সুমন
প্রান্তডেস্ক:৭৫-এ পা দিলেন কবীর সুমন। বাংলা গানের এই কিংবদন্তিতূল্য শিল্পীর জন্মদিন নিয়ে ভক্তদের উন্মাদনা এখনো বহাল আগের মতোই। কিন্তু জন্মদিন নিয়ে এখনও তার কতটা উন্মাদনা আছে? এই বিশেষ দিনটিতে পরিকল্পনা কী? আগামী কাজ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে নানা কথা বললেন কবীর সুমন। আজকালকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নানা অজানা কথা জানালেন গায়ক।
দেখতে দেখতে জীবনের ৭৪টা বছর কাটিয়ে ফেলেছেন কবীর সুমন। এখন এই সময় দাঁড়িয়ে জীবনকে তার কেমন লাগে? কবীর সুমন বলেন, ‘খুবই ইন্টারেস্টিং। আজকাল রাতে ঘুম আসে না। তারপর সারাদিন কেমন আচ্ছন্ন লাগে। তবুও বলব জীবনটা দুর্দান্ত। আমার সময় শেষ হয়ে আসছে, তাতে আমার আনন্দ হয়। ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। খুব ইতিবাচক ভাবেই বলছি হরি দিন তো গেল পার করো আমার…’।
জীবন নিয়ে যতই তিনি ক্লান্ত হয়ে যান, মানুষের কাছে তার জন্মদিন মানে তো একটি বিশেষ দিন। এই দিনে তিনি কী করেন? আজকের জন্য তার পরিকল্পনা কী? এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছু না। আর বাকি পাঁচটা দিনের মতোই যাবে। বাড়িতে বারণ করে দিয়েছি কিছু না করতে।’
আর জন্মদিনের উপহার? জীবনে কি আবার নতুন করে প্রেমে পড়তে চলেছেন তিনি? এর উত্তরে কবীর সুমন বলেন, ‘প্রেম আসবে কি, এসে গিয়েছে। তবে আমি প্রেমে পড়ি না, কামে পড়ি। পৃথিবীর এত সুন্দর, চারিদিকে এত সুন্দরীদের ভিড়। এসব উপভোগ না করলে চলে? এগুলোর জন্যই তো এত বছর বেঁচে থাকা।’
এক একটি কাজের মধ্যে কেন এত বিরতি রাখছেন কবীর সুমন? ক্লান্তিই কি কারণ? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমায় সুরকার হিসেবে কেউ চান না। জাতিস্মর ছবিতে কাজ করি যখন সৃজিত মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন তার আমায় নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা বহুদিনের। কিন্তু কিছুতেই পারছিলেন না। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। কারণ আমায় কেউ চান না বাংলায়। পছন্দ করেন না। রাগ অভিমান থেকে বলছি না, সত্যি বলছি। একজন নায়ক ভালো অভিনয় করলে পর পর ভালো কাজ পান। একজন গায়কও তাই। আমি ভালো কাজ করেও ডাক পাই না।’বর্তমান গানের দুনিয়া নিয়েও অকপটে নিজের মন্তব্য জানান কবীর সুমন। তিনি বলেন, ‘যে যার মতো গান তৈরি করছেন। কিন্তু কেউ খুব একটা শুনছেন বলে মনে হয় না। ভালো কণ্ঠস্বরের অভাব আছে। নিত্য জীবনের শিক্ষাতেও দৈন্যের ছাপ স্পষ্ট। এখন আর কেউ গান মুখস্থ করেন না। খাতা দেখে গাওয়ার সময় এটা। হারমোনিয়াম বাজানোর ঝোঁক কমেছে, বেড়েছে গিটার বাজানো।’ একই সঙ্গে তিনি আক্ষেপ করে বলেন আজকাল আর তাকে কেউ গান শোনাতে বলে না। তার কথায়, ‘আজকাল আর আমায় কেউ গাইতে বলেন না। অথচ ছোটবেলায় সবার আবদার ছিল একটা গান শোনাবে? আমার মা পর্যন্ত ডেকে আমায় গাইতে বলতেন। এখন আর কেউ গান শোনেন না।’