১৯৭১সালের আজকের দিনে গঠিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ
প্রান্তডেস্ক:স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ পূর্ব পাকিস্তান তথা তৎকালিন স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ছাত্র আন্দোলনের নাম। এটি ১৯৭১ সালের গণঅভ্যুত্থান ও অসহযোগ আন্দোলনকে সুসংহত করে সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্বে প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই ছাত্র আন্দোলনটি কখনও কখনও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এবং স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নামেও উদ্ধৃত হয়ে থাকে।
গঠনের পটভূমি
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে সংরক্ষিত নারী আসন সহ ৩১৩টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী বিভিন্ন টাল-বাহানা শুরু করে ও ক্ষমতা হস্তান্তরে কালক্ষেপন করতে থাকে এবং ১ মার্চ তারিখে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এক রেডিও বিবৃতির মাধ্যমে পূর্ব ঘোষিত সময়সূচী অনুসারে ৩ মার্চের জাতীয় পরিষদের আহুত অধিবেশন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করে। এর প্রেক্ষিতে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐদিন দুপুরেই হোটেল পূর্বাণীতে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করে ৭ মার্চ তারিখে রমনা রেসকোর্স ময়দানে সমাবেশ আহ্বানের পাশাপাশি ২ মার্চ ঢাকাতে ও ৩ মার্চ সমগ্র প্রদেশ জুড়ে সর্বাত্মক হরতালের ডাক দেন। সাংবাদিক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণার পরক্ষণেই ঢাকার রাজপথে ছাত্র-জনতার মিছিল শুরু হয়ে যায় ও অল্পক্ষণের মধ্যেই তোফায়েল আহমদের সভাপতিত্বে পল্টন ময়দানে এক স্বতঃস্ফূর্ত জনসভাও অনুষ্ঠিত হয়।
গঠন
১ মার্চের এই বিস্ফোরণ্মূখ পরিস্থিতিতে, দুপুর ৩ ঘটিকার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তত্কালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে ছাত্রলীগের একক নেতৃত্বে এই স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়েছিল যাতে ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ এবং ডাকসুর সহ-সভাপতি আ স ম রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুস কুদ্দুস মাখন। এরপর, ঐদিনই, রাত ৮টায় তৎকালীন ইকবাল হলে (বর্তমানে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক, শেখ ফজলুল হক, তোফায়েল আহমদ, নূরে আলম সিদ্দিকী, আ. স. ম. আবদুর রব, আবদুল কুদ্দুস মাখন ও শাজাহান সিরাজ – ছাত্রলীগের তৎকালীন এবং প্রাক্তন এই ৮ নেতা এক জরুরী সভায় মিলিত হয়ে পরিষদের কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন।