প্রান্তডেস্ক: ইরানের পবিত্র নগরী কোমে শত শত স্কুল ছাত্রীকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে মেয়েদের শিক্ষা বন্ধ করার জন্য এটি করেছে। দেশটির একজন উপমন্ত্রী এই তথ্য জানান। খবর এএফপির। প্রতিবেদনে বলা হয়, কোম শহরটি ইরানের রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে অবস্থিত। গত বছরের নভেম্বরের শেষ থেকে এ শহরে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীদের বিষক্রিয়ার তথ্য সামনে আসতে শুরু করে। আক্রান্ত কয়েকজন স্কুলছাত্রীকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
ইরানের পবিত্র নগরী কোমে শত শত স্কুল ছাত্রীকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ইরানের উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউনেস পানাহি নিশ্চিত করেছেন, বিষক্রিয়াটি ইচ্ছাকৃত ছিল। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ পানাহিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, কোমের স্কুলের বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে বিষ প্রয়োগ করার পর, কিছু লোক সমস্ত স্কুল বিশেষ করে মেয়েদের স্কুল বন্ধ করার আহ্বান জানায়।
তবে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি পানাহি। বিষপানের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে স্বস্তির খবর, যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছিল, তা ভয়াবহ নয়। যে মেয়েদের দেহে ওই রাসায়নিক মিলেছে, তাদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। তাদের সকলের অবস্থাই এখন স্থিতিশীল।
যে-মেয়েদের দেহে ওই রাসায়নিক মিলেছে, তাদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ১৪ ফেব্রুয়ারি শহরের গভর্নরেটের বাইরে জড়ো হয়েছিল। তারা এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছেন। পরের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি সরকারের মুখপাত্র আলী বাহাদোরি জাহরোমি জানান, দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষক্রিয়ার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
পরবর্তীতে গত সপ্তাহে ইরানের প্রসিকিউটর জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজেরি বিষ প্রয়োগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাহশা আমিনির বিরুদ্ধে কঠোর হিজাব নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে দেশটির নৈতিক পুলিশ।
সরকারের মুখপাত্র আলী বাহাদোরি জাহরোমি
১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ হেফাজতে তিনি মারা যান। মাহশার মৃত্যু ঘিরে ইরানে বিক্ষোভের সূত্রপাত। পুরো ইরানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এই বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও নারী অধিকারের দাবি জানান। বিক্ষোভে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সঙ্গে নিহত হয়েছে চার শতাধিক।
আন্দোলনকারীদের উপর নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছে পুলিশ। তাসত্ত্বেও আন্দোলন দমন করা যায়নি। বহু নারীকে জেলে ভরা হয়েছে। গোটা বিশ্ব ইরানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। তারই মধ্যে এই ঘটনা আন্দোলনকে আরও জোরদার করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।