এসআই সন্তোষকে হত্যা: সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে বানিয়াচংয়ে মানববন্ধন

প্রান্তডেস্ক:হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সন্তোষ চৌধুরীকে হত্যা নিয়ে করা বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে।রোবব স্থানীয় শহীদ মিনারে ‘ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে আয়োজিত ওই মানববন্ধনে বিবিসির প্রতিবেদনকে একপেশে বলে দাবি করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের বানিয়াচং থানায় এসআই সন্তোষকে পিটিয়ে হত্যা করে উত্তেজিত জনতা। এরপর তার লাশ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এরআগে সংঘাত থামাতে পুলিশের গুলিতে ওই এলাকায় ৯ জন নিহত হন।
এ নিয়ে গত ২৫ জুলাই একটি প্রতিবেদন করে বিবিসি বাংলা। এতে থানায় বাছাই করে পুলিশ কর্মকর্তা সন্তোষকে হত্যা করা হয় বলে অভিরেযাগ তোলা হয়। বিবিসির বরাত দিয়ে পরবর্তীতে আরও কয়েকটি গণমাধ্যমও এ সংবাদ প্রকাশ করে।এই সংবাদের প্রতিবাদে রোববার বানিয়চংরে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ‘জুলাইযোদ্ধা’ খাইরুল ঠাকুর।
এতে বক্তারা অভিযোগ করেন, গত বছর ১৯ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সহযোগিতায় এসআই সন্তোষের নেতৃত্বে হামলা, মামলা ও লোমহর্ষক নির্যাতন চালানো হয়েছিল।
বক্তারা দাবি করেন, ৫ আগস্ট এসআই সন্তোষের নেতৃত্বে অন্যান্য পুলিশ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের লোকজন নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ৯ জন ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেন। এর ফলস্বরূপ হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা থানা ঘেরাও করে এসআই সন্তোষকে হত্যা করে।
বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত প্রকাশিত প্রতিবেদনে সন্তোষ কেন গুলি করতে গেলেন, এই প্রশ্ন করা হয়েছিলো বানিয়াচং থানার থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) আবু হানিফকে। জবাবে তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে সন্তোষ ভেবেছিল, গুলি করলে ওরা চলে যাবে। হাজার হাজার মানুষ থানা ঘেরাও করে ইটপাটকেল মারতেছিল, থানা পোড়ায় দিছিল। যে দোতলা বিল্ডিং, তার প্রত্যেকটা রুম আগুন দিয়ে পোড়ায় দিছিল। নিচতলায় আগুন, ওপর তলায় একটা রুমে আমরা বন্দী ৬০-৬৫ জন। নিচে অস্ত্রাগার পুড়তেছিল আর ধোঁয়া আমাদের চোখে-মুখে লাগতেছিল। হয়তো আর ১০-১৫ মিনিট থাকলে আমরা শ্বাসকষ্টে মারা যাইতাম। সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের মতো ঘটনা ঘটত আরকি।’
তবে রোববারের মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার এক বছর পর বানিয়াচংয়ে আওয়ামী লীগের সক্রিয় সাংবাদিক, শ্রমিক লীগসহ ‘স্বৈরাচারের’ লোকজনের সাক্ষাৎকার নিয়ে ২৫ জুলাই বিবিসি বাংলা পুলিশের পক্ষ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে, যা জনগণ মেনে নিতে পারছে না।
মানববন্ধনে বক্তারা বিবিসির প্রতিবেদনে এসআই সন্তোষ চৌধুরীর পক্ষে একতরফা তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে অভিযোগ করে আরও বলেন, বিবিসি বাংলার প্রতি আহ্বান জানান তারা যেন উদ্দেশ্যমূলক এই প্রতিবেদনটি সংশোধন করে পুণরায় প্রকাশ করে। অন্যথায়, ৫ আগস্টের মতো বিবিসিকে সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
জুলাই আন্দোলনকারী আরজত লস্কর অন্তরের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলহাজ্ব লুৎফুর রহমান, উপজেলা বিএনপির নেতা নকিব ফজলে রকিব মাখন, বানিয়াচং প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমদাদুল হোসেন খান, মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি জীবন আহমেদ লিটন, সিনিয়র সাংবাদিক মোতাব্বির হোসেন, মানবজমিন প্রতিনিধি মখলিছ মিয়া, সাংবাদিক ও জুলাই যোদ্ধা শেখ সফিকুল ইসলাম সফিক, সমন্বয়ক জুলাই আন্দোলনকারী রিমন আহমেদ, সেজু আহমেদ, কৃষকদলের সদস্য সচিব মুক্তাদির হোসেন সেবুল, সৈয়দ সোহেল রানা, জিসান মিয়া, এবং জুলাই যোদ্ধা আব্দুল বাছিত।এরআগে ২৬ জুলাই মৌলভীবাজারে পথসভায় বিবিসি বাংলার ওই প্রতিবেদনের সমালোচনা করেন এনপিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম।

