জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে ‘শহীদী ঐক্য চত্বর’
প্রান্তডেস্ক:জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের শ্রদ্ধা ও স্মরণে ৫৮ শহীদের নাম ফলক দিয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় নির্মিত হচ্ছে ‘শহীদী ঐক্য চত্বর’।
সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় উদ্বোধনের মাধ্যমে এ কাজ বাস্তবায়ন করে জুলাই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে কাজ করা সংগঠন ‘জুলাই বিপ্লব পরিষদ’।
প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বর্তমানে শুধু ৫৮ শহীদের স্মৃতিকে অমলিন রাখতে তাদের নাম ফলক করা হয়েছে। পরবর্তীতে এটি আরও বাড়ানো হবে।
জুলাই বিপ্লব পরিষদের ভূমিকা নিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব পরিষদ শহীদী চত্বর নির্মাণের কাজে নিজেদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তারা আন্দোলনকে সংগঠিত করতে এবং শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে নিরলস চেষ্টা করছে। এই পরিষদ গণ অভ্যুত্থানকে সফলতার দিকে নিয়ে যেতে এবং জনগণের অধিকারের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শহীদী চত্বর নির্মাণের কাজ শেষ হলে এটি শুধু শহীদদের স্মৃতি রক্ষা করবে না, বরং দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবেও বিবেচিত হবে। আশা করা হচ্ছে, এটি একটি জনমানুষের মিলনস্থলে পরিণত হবে, যেখানে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হবে।
চত্বর উদ্বোধনীতে বলা হয়, শহীদী ঐক্য চত্বর নির্মাণের উদ্দেশ্য হলো ২০২৪ সালের এই আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা। এই শহীদদের আত্মত্যাগ বর্তমানের তরুণ সমাজের জন্য একটি শক্তিশালী অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। তাদের স্মৃতি দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে থাকবে।
বক্তারা আরও বলেন, হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন বাংলাদেশে নতুন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে গঠিত এই আন্দোলন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংঘটিত হয়েছে। আন্দোলনকারীরা একত্রিত হয়ে সরকারের স্বৈরাচারী নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন এবং তাদের দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন। এই আন্দোলন জনসমর্থন ও সংগঠনের মাধ্যমে হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। সরকার আন্দোলন দমাতে বিভিন্ন চেষ্টা করলেও জনগণের ঐক্য ও দৃঢ়তা তা প্রতিহত করেছে। আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায় করতে সক্ষম হয়েছে, যা দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনা ও সমঝোতার প্রয়োজন হবে। এই আন্দোলনের ফলে তরুণ সমাজের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক চেতনা ও নেতৃত্ব তৈরি হবে, যা দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জুলাই বিপ্লব পরিষদের স্থায়ী কমিটির সদস্য শাহনেওয়াজ ফাহাদ। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য স্বাধীন। উপস্থিত ছিলেন তন্নি হাসান, লাবণ্য, রাকিবসহ কমিটির অন্যান্য সদস্য ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।