বিয়ের পিঁড়িতে বসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি
গায়েবিয়ের আসরে নবদম্পতির হাতে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করো’ এবং ‘খাদিজার মুক্তি দাও’ লেখা প্ল্যাকার্ড। ছবি : সংগৃহীত প্রান্তডেস্ক: বিয়ের শাড়ি, পায়ে আলতা, আর অন্যজনের মাথায় মুকুট, পরনে পাঞ্জাবি। বিয়ের আসরে বসেছেন নবদম্পতি। বিয়ের আসর থেকেই প্রতিবাদ চালাচ্ছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজার মুক্তির। গতকাল মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে ঝিনাইদহে ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংসদের দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান হৃদয় ও সুমাইয়া আফরিনের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
বিয়ের আসরে নবদম্পতির হাতে দেখা যায় ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করো’ এবং ‘খাদিজার মুক্তি দাও’ লেখা প্ল্যাকার্ড। তাঁদের এমন প্রতিবাদের ছবি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসিত হয়েছে।
মাহমুদুল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ এবং সুমাইয়া ঝিনাইদহ সরকারি নুরুন্নাহার মহিলা কলেজে পড়ছেন। দুজনের বাড়ি ঝিনাইদহ সদরে।
বিয়েতে সবারই ব্যতিক্রম কিছু করার শখ থাকে। ঘোড়া বা হাতির পিঠে বসে অথবা ঢাকঢোল বাজিয়ে নাচতে নাচতে বিয়ে করতে যান অনেকে। ঝিনাইদহে অনুষ্ঠিত হওয়া এই বিয়েতে দেখা যায় নবদম্পতির হাতে প্ল্যাকার্ড। একজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করো’, আরেকজনের প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘খাদিজার মুক্তি দাও’।
এ ব্যাপারে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান হৃদয় বলেন, ‘আমাদের নতুন জীবনের শুরুটা আমরা করতে চেয়েছি এই নিবর্তনমূলক আইন বাতিল এবং খাদিজার অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়ে। সব ধরনের জুলুমের অবসানের মাধ্যমে গণমানুষের মুক্তির সংগ্রামে বিবেকবান মানুষের অংশগ্রহণের আহ্বান জানানোর প্রত্যয়েই আমাদের বিয়েতে এই প্রতিবাদ।’
তিনি আরো বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা দীর্ঘ আট মাসেরও বেশি সময় কারাগারে। তিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু অসংখ্যবার চেষ্টা করেও তাঁকে জামিনে মুক্ত করা যায়নি। কারণ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারাগুলো জামিন অযোগ্য। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে বিষয়টি স্পষ্ট, এই মামলা রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার এবং ভিন্নমত দমনে ক্ষমতাসীনদের একটি হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৭ আগস্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর নামে ২০২০ সালে যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়, তখন তিনি ১৭ বছর বয়সী। অথচ তাঁকে প্রাপ্তবয়স্ক দেখিয়ে মামলাটি করা হয়। কিডনির সমস্যায় ভুগলেও ঢাকার একটি আদালতে খাদিজার জামিন আবেদন কয়েক দফায় নাকচ হয়েছে।

