ডয়চে ভেলে:: ইউক্রেনের পূর্বে বাখমুত শহর দখলের জন্য রাশিয়া লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রবল চাপের মুখেও ইউক্রেন এখনো প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে৷ তবে বাখমুতের পতন অনিবার্য বলে কিছু মহল মনে করছে৷
ইউক্রেন যুদ্ধে দুই পক্ষের দৃঢ় সংকল্প আপাতত পূবের বাখমুত শহরকে ঘিরে থেমে রয়েছে। রাশিয়া দিন-রাত শহরটির উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গত প্রায় ছয় মাসে রাশিয়া এই প্রথম ইউক্রেনে নতুন করে কোনো জমি দখলের আশা করছে। প্রবল চাপ সত্ত্বেও হাল ছাড়তে রাজি নয় ইউক্রেন।
প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর শীর্ষ জেনারেলরা শহরের প্রতিরোধ চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। দৈনিক ভাষণে তিনি এ ক্ষেত্রে ঐকমত্য তুলে ধরে স্থানীয় সেনাদের সহায়তার অঙ্গীকার করেন।
ইউক্রেন প্রতিরোধ চালিয়ে গেলেও অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাখমুত থেকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর কৌশলগতভাবে পিছিয়ে যাওয়া উচিত।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জানান, বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ অনেক বেশি প্রতীকী হয়ে উঠেছে। তার মতে, শহরটির পতন ঘটলেও সংঘাতে রাশিয়া কোনো বাড়তি সুবিধা পাবে না।
বাখমুতে যুদ্ধরত কয়েকজন ইউক্রেনীয় সেনা সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, রাশিয়া শহরটি প্রায় দখল করে ফেলেছে এবং ইউক্রেনের কিছু সেনা ইউনিট প্রত্যাহার শুরু করে দিয়েছে।
রাশিয়ার আশা, একবার বাখমুত শহরের নিয়ন্ত্রণ হাতে পেলে ডনবাস এলাকার সংলগ্ন অঞ্চলও তাদের হাতে চলে আসবে। কিন্তু সেই প্রচেষ্টার মূল্য হিসেবে এতদিন ধরে যত সংখ্যক রুশ সেনা হতাহত হয়েছে এবং সামরিক সম্পদ কাজে লাগাতে হয়েছে, তাতে সাফল্য এলেও সংশয় থেকে যাচ্ছে।
তার উপর এই অভিযানের মূল হোতা রাশিয়ার ভাগনার ভাড়াটে বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগেনি প্রিগোজিন গোলাবারুদের অভাব নিয়ে প্রকাশ্যে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। তার মতে, গোলাবারুদের সরবরাহ ও পারস্পরিক সমন্বয় ছাড়া এই সংঘাতে জয়লাভ করা কঠিন হবে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বাখমুত শহর প্রতিরোধ করতে গিয়ে ইউক্রেনের গোলাবারুদের ভাণ্ডারের উপরেও চাপ বাড়ছে। পশ্চিমা বিশ্ব যত দ্রুত সম্ভব সামরিক সরবরাহের উদ্যোগ নিলেও আপাতত গোলাবারুদের অভাব প্রকট হয়ে উঠছে।
মরিয়া হয়ে ইউক্রেন আমেরিকার কাছে আবার বিতর্কিত ক্লাস্টার বোমা সরবরাহের অনুরোধ করেছে। বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ শেষ পর্যন্ত যে পক্ষের হাতেই থাকুক না কেন, ইউক্রেন আপাতত রাশিয়ার দখলদারি বাহিনীর বিরুদ্ধে জোরালো সংগ্রামের প্রস্তুতি চালাচ্ছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্ব থেকে যথেষ্ট সংখ্যক ব্যাটেল ট্যাংক ও গোলাবারুদ হাতে পেলেই হারানো জমি ফিরে পেতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী পালটা অভিযান শুরু করতে পারে। রাশিয়া শীতকালেও হামলা বন্ধ করেনি। ফলে, রাশিয়ার বসন্ত অভিযান আগেই শুরু হয়ে গেছে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।