সোমবার (২৪ নভেম্বর) আইইডিসিআর অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সেমিনারে গবেষণার এ ফলাফল তুলে ধরেন সংস্থার চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন হাবিব। তিনি সতর্ক করে বলেন, সাধারণ সংক্রমণও যদি চিকিৎসায় সাড়া না দেয়, তাহলে দেশ ‘পোস্ট-অ্যান্টিবায়োটিক যুগের’ ঝুঁকিতে পড়বে।
২০১৬ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় পরিচালিত এ সার্ভিলেন্সের সর্বশেষ চক্রে (জুলাই ২০২৪-জুন ২০২৫) ৯৬ হাজারের বেশি রোগীর নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে ই-কোলি (৩৫%) ও ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া (১৯.২%) সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে। সব নমুনার ৭৭ শতাংশই গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া।
গবেষণা বলছে, ক্লেবসিয়েলার সেফট্রিয়াক্সোন প্রতিরোধ ২০২২–২৫ সময়ে ৪০.১ থেকে বেড়ে ৫২.২ শতাংশে পৌঁছেছে। মেরোপেনেম প্রতিরোধও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অ্যাসিনেটোব্যাক্টরের ক্ষেত্রে অবস্থা আরও শঙ্কাজনক, মেরোপেনেম প্রতিরোধ ৪৬.৭ থেকে বেড়ে ৭১ শতাংশ। পিডিআর নমুনার মধ্যে ২৭ শতাংশই এ জীবাণু।
হাসপাতালে ‘ওয়াচ গ্রুপ’ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের হারও উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। চলতি বছরে তা ১০৯ শতাংশ, যা অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ইঙ্গিত দেয়। রক্তের নমুনায় এমআরএসএ–র হার ৫৩.৯ শতাংশ এবং ইএসবিএল উৎপাদক ই-কোলির হার ৮৪.৩ শতাংশ। যা আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় অত্যন্ত বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার, প্রেসক্রিপশন গাইডলাইন না মানা, অকার্যকর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ নীতি এবং ল্যাব-সামর্থ্যের ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। এখনই অ্যান্টিবায়োটিক স্টুয়ার্ডশিপ জোরদার না হলে সাধারণ সংক্রমণেও জীবনহানি বাড়বে।
সেমিনারে স্বাস্থ্য খাতের নীতি-নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন এবং জাতীয় পর্যায়ে দ্রুত নীতিগত পদক্ষেপের আহ্বান জানান।