স্নায়ুরোগের ফলে হতে পারে অকাল মৃত্যু, যেসব লক্ষণে সতর্ক হবেন

প্রান্তডেস্ক:স্নায়ুঘটিত রোগ আজকাল খুবই সমস্যায় ফেলে। কোনো কোনো সময় স্নায়ুঘটিত রোগ প্রাণঘাতীও হতে পারে। নার্ভ বিষয়টি এতটাই জটিল যে স্নায়ুরোগের জটিলতা সম্পর্কে অনেকক্ষেত্রেই মানুষের স্পষ্ট ধারণা থাকে না। তাই কখন সচেতন হতে হবে, তা অনেকে বুঝতে পারেন না।
উপসর্গ না চিনলে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ সময় পেরিয়ে যায়। চিকিৎসকরা বলছেন, অনেক সময়ই স্নায়ুর রোগের ইঙ্গিত মেলে হাত ও পায়ে। কিভাবে বুঝবেন স্নায়ুরোগের লক্ষণ, জেনে নিন—
- আপনার কি কখনো হাতে বা পায়ে ঝিনঝিন ধরে?
- হাত-পায়ে অসাড় বোধ হয়?
- হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনি মতো ব্যথা অনুভব করেন?
অনেক সময়ই মানুষ এই উপসর্গগুলোকে সাধারণ ক্লান্তিজনিত দুর্বলতা ভেবে পাত্তা দেন না। এই লক্ষণগুলো স্নায়ুর ক্ষতির লক্ষণ হলেও হতে পারে।সম্প্রতি জার্নাল অব নিউরোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণা এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
গবেষণালব্ধ তথ্য
আমেরিকার মিশিগানে ১৬৯ জনের ওপর সমীক্ষা করা হয়েছিল। রোগীদের গড় বয়স ছিল ৫৮ বছর। তাদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ এই রোগে ভুগছিলেন।প্রায় অর্ধেক রোগীর ডায়াবেটিস ছিল এবং বাকিদের মেটাবলিক সিন্ড্রোম, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, পেটে মেদ, উচ্চ রক্ত শর্করা ও খারাপ কোলেস্টেরল ছিল।
রোগীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা কী
স্যাম্পলদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ রোগীর দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রণার লক্ষণ ছিল। প্রতি তৃতীয় রোগী জানিয়েছেন, তাদের হাতে পায়ে ব্যথা অনুভব হয় প্রায়শই। এই রোগের কারণ স্নায়ুর রোগ ছাড়া অন্য কিছুও হতে পারে। তবে ইনফেকশনের কারণেও এই সমস্যা হতে পারে।সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিউরোপ্যাথি থেকে ডিপ্রেশন এবং অকাল মৃত্যুর ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
মেটাবলিক সিন্ড্রোমও একটি বড় কারণ
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের নিউরোপ্যাথির সমস্যা বেশি। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, যাদের ওজন বেশি, উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা আছে, তাদেরও এই সমস্যা হতে পারে। কারণ এসব সমস্যাও স্নায়ু দুর্বল করে। সমীক্ষায় এও দেখা গেছে, মাসিক রোজগারের সঙ্গে এই রোগের কোনো সম্পর্ক নেই। সমাজের যেকোনো স্তরের মানুষেরই এই সমস্যা হতে পারে। গবেষণায় দাবি, কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এই নিউরোপ্যাথির ঝুঁকি অন্যদের থেকে সামান্য কম।
চিকিৎসকের পরামর্শ
গবেষণার প্রধান গবেষক ড. মেলিসা এ. এলাফ্রস-এর মতে, নিউরোপ্যাথি সময় মতো ধরা পড়া এবং চিকিৎসা করা খুবই জরুরি। এই রোগটি কেবল জীবনের গুণগত মান কমায় না, মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ায়। এই গবেষণা স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে, পা ও হাতের স্নায়ুর ব্যথাকে হালকাভাবে নেওয়া কখনোই উচিত নয়। আপনার হাতেপায়ে যদি অসাড়তা, ঝিনঝিন বা একটানা ব্যথা হয়, তবে তা উপেক্ষা করবেন না। সময় মতো পরীক্ষা এবং চিকিৎসার মাধ্যমে গুরুতর জটিলতা থেকে বাঁচা যেতে পারে।

