বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যের শিকার ৪১.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী

প্রান্তডেস্ক:দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ নানাভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তাদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীর হার ৫১ শতাংশ এবং পুরুষ ৪৯ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যের প্রধান ক্ষেত্র হলো পরীক্ষা ও শ্রেণিকক্ষ।
আজ শনিবার আঁচল ফাউন্ডেশনের এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত জরিপে এ তথ্য জানানো হয়।
জরিপে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ১৭৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে নারী ৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ, পুরুষ ৪৩ দশমিক ১ শতাংশ এবং তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থী শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগের বয়স ২৩ থেকে ২৬ বছর।
জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী পরীক্ষার ফলাফলে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন প্রায় ৩০ শতাংশ, ধর্মীয় কারণে ১৯ শতাংশ, জাতিগত কারণে ৯ শতাংশ, অর্থনৈতিক কারণে ২৩ শতাংশ, শারীরিক অবয়বের কারণে ২৯ শতাংশ এবং রাজনৈতিক মত পার্থক্যের কারণে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী বৈষম্যের মুখে পড়েছেন।
বৈষম্যের স্থান হিসেবে শ্রেণিকক্ষের কথা বলেছেন ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভেন্টে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন ৩৭ শতাংশ, হলে ১৯ শতাংশ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৩১ শতাংশ। শিক্ষার্থীদের মতে, বৈষম্যমূলক আচরণের সবচেয়ে বড় অংশ এসেছে সহপাঠীদের কাছ থেকে (৫৮ শতাংশ), এরপর শিক্ষকদের কাছ থেকে (৫৫ শতাংশ)।
জরিপে আরও দেখা যায়, বৈষম্যের শিকার ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তাদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ বিষণ্নতা, ৪৯ শতাংশ উদ্বেগ, ৪৩ শতাংশ একাকিত্ব এবং ৪১ শতাংশ হীনমন্যতায় ভুগছেন। ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ঘুমের সমস্যা তৈরি হয়েছে, ২২ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তাদের প্যানিক অ্যাটাক বেড়েছে।
মানসিক সমস্যার কারণে ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে অংশ নিলেও পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে পারছেন না।
শুধু ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বৈষম্যের শিকার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন, প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নেই।
জরিপ শেষে আঁচল ফাউন্ডেশন শিক্ষার্থীদের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে মেন্টরিং, নিয়মিত মানসিক স্বাস্থ্য স্ক্রিনিং, বৈষম্য প্রতিরোধে মনিটরিং টিম গঠন, প্রতিটি বিভাগে অভিযোগ বক্স রাখা, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেন্টার চালু এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করার সুপারিশ করেছে।

