কবি, প্রাবন্ধিক ও চিত্রসমালোচক বিষ্ণু দে ১৯০৯ সালের ১৮ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা অবিনাশচন্দ্র দে আইনজীবী ছিলেন। বিষ্ণু দে কলকাতার সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, বঙ্গবাসী কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। এরপর সেন্ট পলস কলেজ থেকে ইংরেজিতে বিএ অনার্স ও এমএ ডিগ্রি নেন। অধ্যাপনা করেছেন যথাক্রমে রিপন কলেজ, মৌলানা আজাদ কলেজ ও কৃষ্ণনগর কলেজে। কল্লোল পত্রিকা প্রকাশের ফলে যে নতুন সাহিত্য উদ্যম ও ব্যতিক্রমী শিল্পচেতনার সৃষ্টি হয় বিষ্ণু দে ছিলেন তার অন্যতম উদ্যোক্তা। পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে গেলে তিনি পরিচয় পত্রিকায় যুক্ত হন এবং ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। নিজেও নিরুক্ত নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। পত্রপত্রিকায় গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ প্রকাশের মাধ্যমে তার সাহিত্যজীবন শুরু। শিল্প, সংগীত ও সংস্কৃতির নানা বিষয় নিয়ে তার বুদ্ধিদীপ্ত রচনা বেশে সাড়া ফেলে। তার উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে আছে কাব্য ‘উর্বশী’, ‘আর্টেমিস’, ‘চোরাবালি’, ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘নাম রেখেছি কোমল গান্ধার’; প্রবন্ধ ‘রুচি ও প্রগতি’, ‘সাহিত্যের ভবিষ্যৎ’, ‘রবীন্দ্রনাথ ও শিল্পসাহিত্যে আধুনিকতার সমস্যা’, ‘মাইকেল, রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য জিজ্ঞাসা’ ও স্মৃতিচারণামূলক বই ‘ছড়ানো এই জীবন’। সাহিত্য কৃতির জন্য তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, নেহরু স্মৃতি পুরস্কার, সোভিয়েত ল্যান্ড পুরস্কারসহ অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন। তিনি প্রগতি লেখক শিল্পী সংঘ, ভারতীয় গণনাট্য সংঘ ইত্যাদি সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৮২ সালের ৩ ডিসেম্বর বিষ্ণু দে মৃত্যুবরণ করেন।