খ্যাতনামা অভিনেত্রী ও কণ্ঠশিল্পী কানন দেবী ১৯৯২ সালের ১৭ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। আনুমানিক ১৯১৬সালের ২২এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গে হাওড়ার এক দরিদ্র পরিবারে জন্মকরেন। কানন দেবী ১৯২৬ সালে মাত্র বারো/তেরো বছর বয়সে কলকাতার ‘ম্যাডান চলচ্চিত্র’ স্টুডিওতে হাজির হন। সুন্দরী হওয়ায় তিনি অভিনয়ের সুযোগ পান এবং ‘জয়দেব’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পারিশ্রমিক হিসেবে পাঁচ টাকা উপার্জন করেন। তার পুরোমাত্রার অভিনয়জীবন শুরু হয় ১৯৩০ সালে। তার প্রথম সবাকচিত্র ‘জোর বরাত’ (১৯৩১)। ১৯৩৫ সালে ‘মানময়ী গার্লস স্কুল’-এ নায়িকার অভিনয় কর হাওড়ার এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সাধারণে ‘কাননবালা’ নামে পরিচিত ছিলেন। শৈশবে বাবার মৃত্যুর পর তার মা দুই মেয়েকে নিয়ে এক দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে ঝিয়ের কাজরে খ্যাতি অর্জন করে তিনি ‘কাননবালা’ থেকে ‘কানন দেবী’তে পরিণত হন। ১৯৩৭ সালে প্রমথেশ বড়ুয়ার সঙ্গে ‘মুক্তি’ সিনেমায় নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করে ভূয়সী প্রশংসা পান। তার জনপ্রিয় সিনেমাগুলোর মধ্যে আছে বিদ্যাপতি, সাথী, পরিচয়, শেষ উত্তর এবং মেজদিদি। অভিনয়ের পাশাপাশি কানন দেবী জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী হিসেবে সংগীতজগতে অসাধারণ অবদান রাখেন। রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি এবং আধুনিক বাংলা গানকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অতুলনীয়। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে পরিচয় ছিল তার এবং কাজী নজরুল ইসলামের কাছে গান শেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। অভিনয়ের জন্য তিনি ‘শ্রেষ্ঠ নায়িকা’ এবং ‘দাদা সাহেব ফালকে’ পুরস্কারসহ বহু সম্মানে ভূষিত হন।