প্রান্তডেস্ক:জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মে মাসে বিশ্বব্যাপী খাদ্যদ্রব্যের দাম গড়ে ০.৮ শতাংশ কমেছে। এপ্রিল মাসের তুলনায় এই পতন স্পষ্ট, যার পেছনে মূলত উদ্ভিজ্জ তেল, শস্য এবং চিনির মূল্য হ্রাস ভূমিকা রেখেছে।
এফএও’র হালনাগাদ ‘ফুড প্রাইস ইনডেক্স’ অনুসারে, মে মাসে এই সূচক দাঁড়িয়েছে ১২৭.৭ পয়েন্টে—যা এক মাস আগের এপ্রিলের ১২৮.৭ পয়েন্টের চেয়ে কম। যদিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সূচকটি এখনো ৬ শতাংশ বেশি, তবে ২০২২ সালের মার্চে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছিল, সেখান থেকে তা প্রায় ২০ শতাংশ নিচে অবস্থান করছে।
শস্য: খাদ্য মূল্য সূচকের সবচেয়ে বড় উপাদান—শস্য ও খাদ্যশস্যের দাম মে মাসে গড়ে ১.৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে ভালো ভুট্টা উৎপাদন এবং বিশ্ববাজারে গমের চাহিদা কমে যাওয়া এ পতনের অন্যতম কারণ। একইসঙ্গে সরগম ও বার্লির দামেও কমতি দেখা গেছে।
উদ্ভিজ্জ তেল: উদ্ভিজ্জ তেলের গড় দাম ৩.৭ শতাংশ কমেছে। পাম, রেপসিড, সয়াবিন এবং সূর্যমুখী তেলের দাম কমে যাওয়ার পেছনে আছে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা হ্রাস।
চিনি: চিনির দাম মে মাসে ২.৬ শতাংশ কমেছে। বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও পানীয় শিল্পে চাহিদা কমে যাওয়া এবং বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তার কারণে এই পতন হয়েছে বলে জানিয়েছে এফএও।
কোন কোন পণ্যের দাম বেড়েছে?
মাংস: মে মাসে মাংসের দাম বেড়েছে ১.৩ শতাংশ। গরু, খাসি এবং শুকরের মাংসের চাহিদা বৃদ্ধির প্রভাব এতে পড়েছে। বিশেষ করে জার্মানিতে পা ও মুখ রোগসংক্রান্ত বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় শুকরের মাংসের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তবে বার্ড ফ্লুর আতঙ্কে মুরগির মাংসের চাহিদা কিছুটা কমেছে।
দুগ্ধজাত পণ্য: দুগ্ধজাত দ্রব্যের দাম গড়ে ০.৮ শতাংশ বেড়েছে। এশিয়ায় চাহিদা বাড়ায় মাখনের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে, যার প্রভাব পড়েছে পনির ও গুঁড়ো দুধের ওপরও।
চাল: যদিও চালের দাম সূচকে সরাসরি প্রভাব ফেলেনি, তথাপি ইন্দিকা চালের চাহিদা বৃদ্ধি এবং মার্কিন ডলারের দরপতনের কারণে চালের দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। এফএও আশা করছে, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক শস্য উৎপাদন ২.৯১১ বিলিয়ন টনে পৌঁছাবে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ২.১ শতাংশ বেশি। এতে বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি আরও স্থিতিশীল হবে বলে সংস্থাটির পূর্বাভাস। মূল্য হ্রাসের এই ধারা বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনতে পারে বলেও মত দিয়েছে এফএও।