চাঁদে অবতরণ ব্যর্থ, মিশন বাতিল জাপানি প্রতিষ্ঠানের

এএফপি:চাঁদে সফলভাবে অবতরণের আগ মুহূর্তে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছে জাপানের প্রথম বেসরকারি উদ্যোগের মহাকাশযান ‘রেজিলিয়েন্স’। ফলে শুক্রবার মিশনটি বাতিল ঘোষণা করেছে টোকিওভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইস্পেস।
প্রতিষ্ঠানটি আশা করেছিল, তারা হবে বিশ্বের তৃতীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে প্রথম, যারা নিজেদের রোবটিক ল্যান্ডার নিয়ন্ত্রণ করে চাঁদের মাটিতে সফলভাবে নামাতে পারবে। ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটির আগের মিশনও ব্যর্থ হয়েছিল।
শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে মহাকাশযানটির অবতরণের সময় নির্ধারিত ছিল।
মিশনের আরেকটি লক্ষ্য ছিল চাঁদের মাটি থেকে দুটি নমুনা সংগ্রহ করে তা প্রতীকীভাবে নাসার কাছে পাঁচ হাজার ডলারে বিক্রি করা। যদিও সেই নমুনা চাঁদেই থেকে যেত, তবে উদ্দেশ্য ছিল চাঁদে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালানোর পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে জোরালো করা।
চাঁদে সফট ল্যান্ডিংয়ে এখন পর্যন্ত সফল হয়েছে পাঁচটি দেশ—রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও জাপান। তবে এসব ছিল রাষ্ট্রীয় প্রকল্প। এখন বেসরকারি কম্পানিরাও মহাকাশ দৌড়ে অংশ নিচ্ছে। তারা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, মহাকাশে যাতায়াত হবে সস্তা ও ঘন ঘন।
গত বছর হিউস্টনে অবস্থিত ইনটুইটিভ মেশিনস প্রথম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে চাঁদে পৌঁছয়। যদিও তাদের ল্যান্ডারটি অবতরণ করেছিল ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায়, তবু তারা পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করতে পেরেছে এবং ছবি পাঠিয়েছে।
চলতি বছরের মার্চে স্পেসএক্স রকেটে চড়ে ফায়ারফ্লাই অ্যারোস্পেস প্রতিষ্ঠানের ব্লু ঘোস্ট মিশনও সফল হয়। এই একই রকেটে চাঁদের পথে পাড়ি দেয় আইস্পেসের রেজিলিয়েন্স।
তবে রকেট শেয়ার করলেও রেজিলিয়েন্স চাঁদে পৌঁছতে ব্লু ঘোস্টের চেয়ে বেশি সময় নিয়েছিল। আইস্পেস তাদের প্রথম মিশনের ব্যর্থতার পর এবার নিজেদের সফলতার মুহূর্তের অপেক্ষায় ছিল। ২০২৩ সালে তাদের প্রথম মিশন ঝুঁকিপূর্ণ অবতরণের কারণে ব্যর্থ হয়েছিল।
চাঁদে অবতরণ করা খুব কঠিন কাজ। মহাকাশযান গুলোকে থ্রাস্টার কন্ট্রোল নামের বিশেষ এক ইঞ্জিন দিয়ে ধীরে ধীরে নিচে নামতে হয়। কারণ চাঁদের ভূপৃষ্ঠ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
চলতি বছরের মার্চের শেষ দিকে ইনটুইটিভ মেশিনসের দ্বিতীয় মিশনে পাঠানো অ্যাথেনা চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে মন্স মউটন প্ল্যাটো নামের স্থানে নামার জন্য তৈরি হয়েছিল, সেখানে অবতরণ করার সময় যানটি কাত হয়ে পড়ে যায়। ফলে সৌরশক্তি না পেয়ে তা অচল হয়ে পড়ে।