উদ্বেগজনক বলল সিপিডি
গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থাটির নিজ কার্যালয়ে সিপিডির তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাজেটে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে কাঠামোগত পরিবর্তনে সেটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে, একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি, ওখানে কম, এরকমভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাজেটের আকার নিয়ে অনেকদিন ধরে আলোচনা হচ্ছে। সেটার অন্যতম কারণ হচ্ছে আমাদের যে চলমান অর্থনৈতিক সংকট অর্থাৎ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মসংস্থানের সমস্যা এবং কম রাজস্ব আহরণ। এর প্রেক্ষিতেই অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বাজেটটি উপস্থাপন করেছেন বলে আমাদের মনে হয়।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে গত অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ কমানো হয়েছে। ১৫টি খাতের মধ্যে ১৪টিতেই বরাদ্দ কমানো হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি- এ তিনটি খাতে টাকার অঙ্কে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সেটা আমাদের কাছে একটু উদ্বেগজনক মনে হয়, কারণ আমরা বারবার এ তিন খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে এসেছি। করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর প্রসঙ্গে ফাহমিদা বলেন, করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এটা একটি ভালো পদক্ষেপ। এ ছাড়া যারা ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, সেটাও আমরা ভালো পদক্ষেপ মনে করি। বাজেটে করের হার পরিবর্তন নিয়ে তিনি বলেন, নিম্ন মধ্যম আয়ের যারা আছে, তাদের জন্য করের বৃদ্ধি বেশি পড়বে, আর যারা উচ্চ আয়ের রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে করের প্রবৃদ্ধি কম পড়বে। এ ক্ষেত্রে আমরা একটি বৈষম্যের চিত্র দেখতে পাচ্ছি। অঞ্চলভিত্তিক ৫ হাজার টাকা করের ব্যবস্থা করা হয়েছে, আমরা মনে করি এখানে একটি বৈষম্য হয়েছে।
রাজস্ব জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে তিনি বলেন, ১০ বছর পর অর্থাৎ ২০৩৫ সালে রাজস্ব জিডিপির হার ১০ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে। এটা অত্যন্ত কম। কারণ আগামী অর্থবছরের রাজস্ব জিডিপির হার ৯ শতাংশ। ১০ বছর পর গিয়ে মাত্র দেড় শতাংশ বাড়বে। এটা কেমন লক্ষ্যমাত্রা? তখন তো আমরা উন্নয়নশীল দেশ হয়ে যাব। এরকম নিম্নগামী আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা কীভাবে প্রবৃদ্ধি অর্জন করব? ফাহমিদা বাজেটের কিছু ইতিবাচক দিকও তুলে ধরে বলেন, ই-কমার্সকে একটি ফরমাল সেক্টরে আনা, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের অধীনে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা, এগুলো ভালো পদক্ষেপ। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য যে ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে সেটাকেও আমরা স্বাগত জানাই।