শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন এবং মোল্লা মাসুদের আটকের গুঞ্জন

প্রান্তডেস্ক:শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনসহ তার সহযোগী মোল্লা মাসুদকে কুষ্টিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই নিয়ে জেলাজুড়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোর রাতে কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর সোনার বাংলা সড়ক এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তাদেরকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছে বলে এলাকবাসীর সূত্রে জানা যায়। তবে গ্রেফতারের বিষয়টি এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করা হয়নি।
কালিশংকরপুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গেল দেড় মাস আগে কালিশংকরপুর সোনার বাংলা সড়ক এলাকার মৃত মীর মহিউদ্দিনের বাড়ির নিচ তলা ভাড়া নেয় দুই যুবক। ওই বাড়িতেই থাকতেন তারা। বাড়ির নিচতলা ভাড়া নেওয়ার পর থেকে বাড়ির দরজা-জানালা খুলতে দেখেননি স্থানীয় বাসিন্দারা।
আজ মঙ্গলবার হঠাৎ ভোররাতে বাড়িটির তালা ভাঙার শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন তারা। এরপর দেখতে পান সেনাবাহিনীর সদস্যরা বাড়িটি ঘিরে অভিযান চালাচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পর দুজনকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনীর গাড়িতে তুলে নিয়ে যান তারা। এরপর থেকে এলাকাবাসী ও আশপাশের লোকজনের মধ্যে আতঙ্কে দিন কাটছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, “আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত কালীশংকরপুর এলাকার সোনার বাংলা মসজিদের পাশের একটি তিনতলা বাড়ি ঘিরে রাখে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। কমপক্ষে পাঁচটি সেনাবাহিনীর গাড়ি অভিযানে অংশ নেয় এবং বাড়ির নিচতলা ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি চালানো হয়। অভিযান চালানো বাড়িটি স্থানীয় মীর মহিউদ্দিনের মালিকানাধীন। বাড়ির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মেস হিসেবে থাকেন।”
সেই মেসের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, “কয়েকদিন ধরে নিচতলায় এক দাড়িওয়ালা অপরিচিত ব্যক্তি থাকতে দেখা যাচ্ছিল। তিনি দিনে একবার শুধু খাবার সময় বাইরে বের হতেন।
অভিযানের সময় সেনা সদস্যরা শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট দুটি কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং বারবার বলেন, “তোমাদের কোনো ভয় নেই।”
এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সকাল আটটার দিকে একটি কালো মাইক্রোবাস আসে। তখন সেনা সদস্যরা একজন দাড়িওয়ালা ব্যক্তিকে হাতকড়া পরিয়ে এবং অন্য এক যুবককে হাত বেঁধে গাড়িতে তোলেন।’
অভিযান শেষে একজন সেনা কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘এখন বললে ভয় পাবে। পরে মিডিয়ার মাধ্যমে সব জানতে পারবে।’
ঘটনাস্থলের পাশের বাসিন্দা রবিউল আলম বলেন, ‘সকালবেলা দেখি সেনাবাহিনীর গাড়ি। পরে দেখি দুইজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আরেকজন জানান, জানালা দিয়ে দেখতে পান, ভেতরে তল্লাশি চলছে এবং কিছুক্ষণ পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুইজনকে নিয়ে চলে যান। এদের একজনের মুখে দাড়ি আছে।’
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমরাও শুনেছি। তবে গ্রেফতারের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত অফিসিয়ালি কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।’
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার সেনা ক্যাম্পের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, এখানে আমাদের কোনো অভিযান ছিল না। অন্য কোনো বাহিনী করেছে কি না জানি না। জানার চেষ্টা করছি।