আধুনিক রুশ সাহিত্যের সম্রাট হিসেবে খ্যাত আলেকজান্ডার পুশকিনের জন্ম মস্কোয় ১৭৯৯ সালের ২৬ মে। ইংরেজি সাহিত্যে শেকসপিয়ার, জার্মান সাহিত্যে গ্যেটে ও বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের মতোই রুশ সাহিত্যে পুশকিনের সাম্রাজ্য। বাবা লভোভিচ পুশকিনের কবিতা লেখার শখ ছিল, বিশাল পাঠাগারও ছিল। তাই বইয়ের রাজত্বেই বেড়ে ওঠা পুশকিনের। ১৮২০ সালে ‘রুসলান ই লুদমিনা’ নামে কাহিনীকাব্য প্রকাশিত হলে তাকে উদীয়মান কবি হিসেবে ধরে নেন অনেকে। পরের ১০ বছর তিনি কাব্য, গদ্য এসবের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কাটিয়েছেন। ১৮২৯ থেকে ১৮৩৬ সালের মধ্যে তার রচনাগুলো রুশ সাহিত্যে নবদিগন্তের উন্মেষ ঘটায়। রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে পুশকিনকে সেন্ট পিটার্সবুর্গ থেকে বন্দি করে নির্বাসনে পাঠানো হয় দক্ষিণ রাশিয়ার একটি দুর্গম অঞ্চলে। তবু তার লেখনী থেমে থাকেনি। ১৮৩৬ সাল থেকে পুশকিন একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন, বাংলায় যার নাম হতে পারে ‘সমসাময়িক সাহিত্য’। সাময়িকীটি তার মৃত্যুর পরও ১৮৬৬ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। রাশিয়ান রোমান্টিসিজমের প্রদর্শক হিসেবে স্বীকৃত পুশকিনের ‘আমি তোমাকে ভালোবাসতাম, সম্ভবত এখনো ভালোবাসি’ কবিতাটি ভালোবাসার শক্তিশালী কবিতা হিসেবে সমাদৃত। তিনি শুধু রাশিয়ান হিসেবেই নন, বরং সমগ্র পৃথিবীতে অত্যন্ত শক্তিমান কবি হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন। কিছু ব্যক্তিগত শত্রুর সঙ্গে সংঘর্ষকালে তিনি আহত হন এবং দুই দিন পরই মারা যান। ১৮৩৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পুশকিনের অকাল মৃত্যু রুশ সাহিত্যে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত হয়।