আবুধাবিতে রেকর্ড ৫০.৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা
প্রান্তডেস্ক:সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুক্রবার ৫০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। মে মাসে এটি দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। মরুভূমি অধ্যুষিত এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এই দেশে কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। শুক্রবার জুমার নামাজে অংশ নেয়া অনেক মুসল্লি অসুস্থ বোধ করেন। কেউ কেউ প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন, যদিও দেশটি চরম গরমে অভ্যস্ত। সর্বোচ্চ এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় আবুধাবির একটি অঞ্চলে। বিশ্বের অন্যতম উত্তপ্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে এটি একটি এবং এই তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় রাষ্ট্রের রাজধানী। একজন ২৬ বছর বয়সী অধিবাসী বলেন, শুক্রবার আবহাওয়া ভয়ানক গরম ছিল, সহ্য করার মতো নয়। আমি মসজিদে দেরি করে পৌঁছেছিলাম। তাই বাইরে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে হয়েছে। নামাজ শেষে আমি পুরোপুরি ঘেমে গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল যেন অজ্ঞান হয়ে যাবো।
৪৫ বছর বয়সী ইউসুফ দুবাইয়ে পর্যটকদের জন্য হট এয়ার বেলুন পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, এই দমবন্ধ করা পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছিল কিছুই করতে পারছি না। আসলে সমস্যা আর্দ্রতায়, বাতাসে যেন অক্সিজেনই নেই। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন, পুনরাবৃত্তি হওয়া গরমের ঢেউ জলবায়ু পরিবর্তনের পরিষ্কার প্রভাব এবং ভবিষ্যতে এগুলো আরও ঘন ঘন, দীর্ঘস্থায়ী এবং ভয়াবহ হবে। গত ৩০ বছরে চরম গরম দিনের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ২০২৪ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরব দেশগুলোর বহির্বিশ্বে কাজ করা শ্রমিকদের মধ্যে ৮৩.৬ শতাংশই চরম তাপের ঝুঁকিতে, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি স্পষ্টভাবে সামনে আসে গত জুনে, যখন সৌদি আরবে হজ পালনকালে ১,৩০০ জনের বেশি মানুষ মারা যান। তাদের বেশির ভাগই অননুমোদিত হাজি ছিলেন এবং দীর্ঘ সময় রোদের মধ্যে থাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ২০২২ সালে গ্রিনপিস পরিচালিত একটি গবেষণায় বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্য মারাত্মক খাদ্য ও পানির ঘাটতি এবং তীব্র গরমের ঝুঁকিতে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘটছে। এই গবেষণায় দেখা যায়, এই অঞ্চল বিশ্বের গড়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হারে উত্তপ্ত হচ্ছে। ফলে এখানকার খাদ্য ও পানি সরবরাহ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।