প্রান্তডেস্ক:কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বারপাড়া ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মপুর গ্রাম। সেখানে চারা বাড়ি এলাকার সরু গলিপথ ধরে কয়েক মিনিট হাঁটলেই চোখে পড়ে এক টুকরো খোলা মাঠ। মাঠের মাঝখানে মাটি খুঁড়ে বের করে আনা হয়েছে ইটের তৈরি একখণ্ড দেয়াল। দেয়ালের গায়ে পাথরের কাজ, কিছু জায়গায় ধরা রঙের ছাপ। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন এলাকার বাসিন্দা আব্দুল খালেক মিয়া (৭২)। এ আবিষ্কারে অবাক হয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এই জায়গায় এমন কিছু লুকানো ছিল, ভাবতেও পারিনি। ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি ফাঁকা জমি, আজ বুঝলাম কত ইতিহাস পায়ের নিচে ছিল।’
ঘটনার শুরু মাত্র কয়েক দিন আগে। গ্রামের রহিম উদ্দিন তার পুরনো ঘর ভেঙে নতুন বাড়ি তোলার পরিকল্পনা করেন। শ্রমিকরা মাটি খননের সময় দেখতে পান কিছু ইটের স্তূপ। কৌতূহলবশত খুঁড়ে বের করে আনেন একাংশ দেয়াল। খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র চাঞ্চল্য। প্রত্নতত্ত্বটি একনজর দেখার জন্য প্রতিদিন শত শত লোক আসেন। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রাবেয়া আক্তার বলেন, আমরা কাঠামোটি প্রাথমিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। দেয়ালের গঠন, ইটের ধরন ও নির্মাণশৈলী দেখে মনে হচ্ছে এটি ব্রিটিশ ভারতের জমিদার আমলের স্থাপনা হতে পারে। তবে নিশ্চিত হতে আরও খনন ও নমুনা বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
স্থানীয় তরুণরা স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করছেন। ধর্মপুর হাইস্কুলের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, আমরা চাই, এই জায়গা সংরক্ষিত হোক। এখানে একটি ছোট জাদুঘর হলে আমরা গর্ব করতে পারব।
বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম বলেন, আমরা আশা করি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এখানকার গুরুত্ব বুঝে পদক্ষেপ নেবে। যদি এটি সংরক্ষণ করা যায়, তাহলে ধর্মপুরকে ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন জায়গাটি ঘিরে রেখেছে এবং যত্রতত্র প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক দল আরও গভীর খননের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া খানম দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের লোকজনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করা হচ্ছে। প্রতিদিন কতটুকু কাজ হচ্ছে তার আপডেট দিচ্ছেন তারা। তবে ধারণা করা হচ্ছে কোটবাড়ির মতো প্রাচীন নিদর্শন মিলবে।(সৌজন্যে:দৈনিকদেশরূপান্তর)