প্রখ্যাত কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও ভাষাবিজ্ঞানী হুমায়ুন আজাদ ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল বিক্রমপুরের রাড়িখাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আবদুর রাশেদ ছিলেন স্কুলশিক্ষক, মা জোবেদা খাতুন গৃহিণী। তিনি রাড়িখালের স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্সসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর (১৯৬৮) ডিগ্রি নেন। তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে যোগ দেন এবং ১৯৮৬ সালে অধ্যাপক হন। হুমায়ুন আজাদের কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ‘অলৌকিক ইস্টিমার’, ‘জ¦লো চিতাবাঘ’, ‘যতোই গভীরে যাই মধু যতোই ওপরে যাই নীল’, ‘আমি বেঁচেছিলাম অন্যদের সময়ে, ‘কাব্যসংগ্রহ’ ও ‘কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু’ উল্লেখযোগ্য। হুমায়ুন আজাদের জনপ্রিয় উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল’, ‘সবকিছু ভেঙে পড়ে’, ‘মানুষ হিশেবে আমার অপরাধসমূহ’, ‘যাদুকরের মৃত্যু’, ‘শুভব্রত, ‘তার সম্পর্কিত সুসমাচার’, ‘রাজনীতিবিদগণ’, ‘কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ’, ‘নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধু’, ‘ফালি ফালি করে কাটা চাঁদ’ ও ‘শ্রাবণের বৃষ্টিতে রক্তজবা’। ভাষাতত্ত্ববিষয়ক তার প্রসিদ্ধ তিনটি গ্রন্থ বাংলা ভাষার শত্রুমিত্র, Pronominalization In Bengali, বাক্যতত্ত্ব এবং ভাষাবিজ্ঞানবিষয়ক দুটি গ্রন্থ, ‘তুলনামূলক ও ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান’ ও ‘অর্থবিজ্ঞান’ বিশেষভাবে সমাদৃত। সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলা প্রাঙ্গণে হুমায়ুন আজাদ প্রাণঘাতী হামলার শিকার হন। থাইল্যান্ডে চিকিৎসার পর তিনি ‘পিইএন’-এর ফেলোশিপে জার্মানিতে পাড়ি জমান। জার্মানির মিউনিখ শহরে ২০০৪ সালের ১২ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।