১৯৯২ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়। তার জন্ম ১৯২১ সালের ২ মে কলকাতায়। তিনি আলোকচিত্রী, চিত্রকর, শিশুসাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ হিসেবেও সুপরিচিত। তার বাবা লেখক, সম্পাদক ও আলোকচিত্রী সুকুমার রায় এবং মা সুপ্রভা রায় ছিলেন সংগীতশিল্পী। জন্মের মাত্র দুবছরের মধ্যেই বাবাকে হারিয়ে মামার আশ্রয়ে তার শৈশব-কৈশোর অতিবাহিত হয়। বালিগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্সসহ বিএ পাসের পর ১৯৪০ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। ১৯৪৩ সালে বিজ্ঞাপনী সংস্থার কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয় এ সময়ই তিনি বইয়ের প্রচ্ছদ ও পত্রিকায় ছবি আঁকা শুরু করেন। ১৯৫০ সালে চাকরির সূত্রে লন্ডনে অবস্থানকালে তিনি প্রায় ১০০ চলচ্চিত্র দেখেন এবং বিখ্যাত সব পরিচালকের সঙ্গে পরিচিত হন। ইতালির ‘দ্য বাইসাইকেল থিফ’ দেখে তিনি মুগ্ধ হন এবং বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ অবলম্বনে ছবি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। দেশে ফিরে ১৯৫২ সালে তিনি অপেশাদার লোকজন নিয়ে ছবির শুটিং শুরু করেন। বহু ধারদেনা ও গহনা, বইপত্র ও সঞ্চিত সম্পদ বিক্রি করেও তিনি ছবির কাজ শেষ করতে পারেননি। পরে মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় নিজে ছবিটির নির্মাণ ব্যয়ের ব্যবস্থা করেন। ১৯৫৫ সালে পথের পাঁচালী মুক্তির পরপরই সারা বিশে^ প্রশংসা লাভ করে এবং পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করে। এ ছাড়া তিনি বেশ কিছু চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন, বহু ছবির চিত্রনাট্য রচনা ও সংগীত পরিচালনা করেছেন। লেখক হিসেবেও তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। পথের পাঁচালী ১৯৫৫ থেকে ১৯৬৬ সালের মধ্যে ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করে। বিভিন্ন কাজের জন্য তিনি ভারত সরকারের ৪০টি এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ৬০টি পুরস্কার লাভ করেন।