পুরোনো চেহারায় ফিরবে আওয়ামী লীগ, তৈরি হচ্ছে মাস্টারপ্ল্যান
প্রান্তডেস্ক:দেশে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার শাসন অবসান ঘটানোর পর আওয়ামী লীগ পুনরায় মাঠে সক্রিয় হতে শুরু করেছে। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর পর ক্ষমতাচ্যুত এই দলটি, হাজারো শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ফের বড় ফ্যাসিস্ট হয়ে ফিরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সম্প্রতি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিল করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। এর পাশাপাশি, গোপনে সমাবেশের প্রস্তুতি নেওয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে নিয়মিত বক্তৃতা-বিবৃতি দেয়ার প্রবণতা বেড়েছে। শুরুর দিকে মিছিলে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা কম থাকলেও, তা ক্রমেই বাড়ছে।
এদিকে, কেউ কেউ মনে করছেন রাজনীতিতে তৃতীয় বিকল্প শক্তি ঠেকানোর জন্য কিছু রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগকে সাহায্য করছে। এমনকি, আওয়ামী লীগকে সংসদে বিরোধী দল বানানোর জন্যও গভীর চক্রান্ত চলছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ভবিষ্যতে এই চক্রান্তের ফলস্বরূপ, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার রাজনৈতিক মামলায় আটকা পড়ে যেতে পারে।
এছাড়া, জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে জানান, ‘যেদিন থেকে আমাদের আওয়ামীবিরোধী অবস্থান এবং কম্প্রোমাইজের রাজনীতির বিরোধিতাকে ‘শিষ্টাচারবহির্ভূত’ বলা শুরু হয়েছে, সেদিন থেকেই আওয়ামী লীগের মিছিল বড় হতে শুরু করেছে।’ তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, ‘অতি শিগগিরই আওয়ামী লীগ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসুন, না হলে শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ শুরু করতে হবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ পুনরায় মাঠে নামতে সক্ষম হয়েছে। দেশি-বিদেশি শক্তি তাদেরকে সাহস ও শক্তি প্রদান করছে, এবং এর মাধ্যমে তারা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে, গত এক সপ্তাহে রাজধানীতে অন্তত চারটি ঝটিকা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ শুক্রবার উত্তরায় আওয়ামী লীগ মিছিল করেছে। তবে, সম্প্রতি সরকারও নড়েচড়ে বসে এবং গোপন অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের বিভিন্ন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, পুলিশকে আওয়ামী লীগের মিছিল ঠেকানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পুলিশ ইতোমধ্যে দুজনকে আটক করেছে।’
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে আমি না, তবে তাদের যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধ করেছে, তাদের বিচার করা উচিত।’ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘ফ্যাসিজম যেন বাংলাদেশে আর না দাঁড়াতে পারে, এজন্য আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা জরুরি।’