শাবি অধ্যাপকের বি রু দ্ধে গবেষণা চৌর্যবৃত্তিসহ নানা অভিযোগ
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও অনুবাদক ড. নিয়াজ জামান প্রকাশিত ‘সৈয়দ ওয়ালীউল¬াহ: এ সেঞ্চুরি ট্রিবিউট’ বইয়ে ÔThe Portrayal of Submissive and Rebellious Rural Bengali Women in Syed Waliullah’s Tree Without Roots’ শিরোনামে ২০২২ সালে একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়।
উভয় প্রবন্ধেই সৈয়দ ওয়ালিউল¬াহর ‘লালসালু’ উপন্যাসে গ্রামীণ নারীদের চরিত্র বিশ্লেষণে প্রায় একই বক্তব্য, উদ্ধৃতি ও উপস্থাপনা দেখা যায়। যেখানে সহকারী লেখক হিসেবে ছিলেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রাশেদ মাহমুদ ও ইব্রাহিম খলিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষকের সাথে কথা বললে তারা বলছেন, এ ধরনের উচ্চমাত্রার মিল একে চৌর্যবৃত্তির প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে গণ্য করে। যদি দুটি কাজ পৃথকভাবে উপস্থাপিত হয় এবং একে অপরকে সঠিকভাবে উল্লেখ না করা হয়, তবে তা অ্যাকাডেমিক নীতিমালার গুরুতর লঙ্ঘন। একজন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ গবেষণা এবং শিক্ষার পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলেও জানান তারা।
একাধিক বিভাগের প্রধানের সাথে কথা বললে তারা জানান, এসব তথ্য নিতে গেলে কমপক্ষে বিভাগের প্রধানের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। বিভাগীয় প্রধানের অনুমতি ছাড়া কেউ এসব তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন না। হিমাদ্রী শেখর রায় এসব তথ্য সংগ্রহ করেছেন আমরা সেটা পরে জানতে পেরেছি এবং অফিস সহকারীদের অনুমতি ছাড়া এসব তথ্য কেন দিয়েছেন এসব কারণও জানতে চেয়েছি অফিসিয়ালি।
তবে এ বিষয়ে ড. হিমাদ্রী শেখর রায় বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কাজে তথ্য সংগ্রহ করে তাকি। এতে দোষের কিছু নেই।’
এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শরীফা ইয়াসমিনকে একাধিকবার ফোন দিলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘পূর্বে কোনো জার্নালে প্রকাশিত লেখা আবারও অন্য কোথাও দেওয়া ইথিক্যাল জায়গা থেকে উচিত না এবং এটা কাউন্ট করাও ঠিক না।’
এসব বিষয়ে মুঠোফোনে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায় বলেন, ‘এ ব্যাপারে প্রথম লেখক (ইব্রাহীম খলিল) যিনি আছেন তিনি ভালো বলতে পারবেন। আর এতে কোন দোষ নেই। আমার লেখা আমি যেকোন জায়গায় ব্যবহার করতেই পারি। এটাকে চুরি বলে না। অধ্যাপক নিয়াজ জামানের বইয়ে অনুমতি নিয়ে আর্টিকেল দেওয়া হয়েছে। উনার কাছে সকল ডকুমেন্টস দেয়া আছে।’
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, লেখক ও অনুবাদক অধ্যাপক ড. নিয়াজ জামান। তিনি বলেন, ‘এটাতো খুবই সিরিয়ায় অভিযোগ। আমি তো এ বিষয়ে কিছুই জানতাম না। আর এটাতো আমার পক্ষে জানা সম্ভবও না। যে-সব পেপার আগে প্রকাশিত হয়েছে এসব আর দ্বিতীয়বার ক্রেডিট ছাড়া প্রকাশিত হওয়ার সুযোগ নেই। এটা যে পূর্বে প্রকাশিত হয়েছে সেটাও উল্লেখ করা হয়নি। আমার ওই জার্নালে আরো পেপার আছে পূর্বে প্রকাশিত। এগুলো সেখানে উল্লেখও করা হয়েছে। কিন্তু এটার বিষয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। অমি অত্যন্ত দুঃখিত যে এটা আমি জানতাম না বা আমাকে জানানো হয় নি। আমি কথা বলবো এটা নিয়ে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া রাষ্ট্রতিরও নিয়ম নেই শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করা। এটা কোনোভাবেই উচিত না, না জানিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার।’ গবেষণা প্রবন্ধের ব্যাপারে জানত চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আগে আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নালে লেখাটি প্রকাশ করা হয়েছে তাই আবার অন্য একটি প্রবন্ধে প্রকাশ করলে সেটি উল্লেখ করা উচিত। উল্লেখ না করে প্রকাশ করা উচিত না।’:(সৌজন্যে:সিলেটভিউ২৪.কম)