এই দিনে: ৩০ মার্চ
১৮৯৯ সালের ৩০ মার্চ অবিভক্ত ভারতের উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন বাঙালি সাহিত্যিক শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। তার রচনা প্রথম প্রকাশিত হয় ২০ বছর বয়সে, যখন তিনি কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজে আইন নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন। পড়াশোনার সঙ্গেই তিনি সাহিত্যচর্চাও করতে থাকেন। তার সৃষ্টি গোয়েন্দা চরিত্র ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ আত্মপ্রকাশ করে ১৯৩২ সালে। শরদিন্দু ১৯৩৮ সালে বম্বে টকিজে চিত্রনাট্যকার হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৫২ সালে সিনেমার কাজ ছেড়ে দেন। এরপর ১৮ বছর তিনি সাহিত্যচর্চায় অতিবাহিত করেন। ব্যোমকেশ বক্সী শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় সৃষ্ট সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্র। ব্যোমকেশ একজন গোয়েন্দা। নিজেকে তিনি সত্যান্বেষী বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। ১৯৩২ সালে ‘পথের কাঁটা’ উপন্যাসে ব্যোমকেশের আত্মপ্রকাশ। এ ছাড়া তার উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে আছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপন্যাস। যেমন : ‘কালের মন্দিরা’, ‘গৌর মল্লার’, ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘ’, ‘তুঙ্গভদ্রার তীরে’ ইত্যাদি। শরদিন্দুর জীবনে সিনেমার, বিশেষ করে মুম্বাইয়ের সিনেমার খুব বড় ভূমিকা ছিল। তিনি যে ছবিগুলোতে চিত্রনাট্যকারের কাজ করেছেন সেগুলো হলো ‘দুর্গা’ (১৯৩৯), ‘কঙ্গন’ (১৯৩৯), ‘নবজীবন’ (১৯৩৯) ও ‘আজাদ’ (১৯৪০)। তার বিভিন্ন রচনা থেকেও সিনেমা তৈরি হয়েছে। সত্যজিৎ রায় শরদিন্দুর কাহিনি অবলম্বনে নির্মাণ করেছেন ‘চিড়িয়াখানা’। তপন সিংহের পরিচালনায় নির্মিত হয়েছে ‘ঝিন্দের বন্দী’। তরুণ মজুমদার তৈরি করেছেন ‘দাদার কীর্তি’। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মরু ও সংঘ’ ছোটগল্প নিয়ে নির্মিত পুরস্কারপ্রাপ্ত হিন্দি ছবি ‘তিশগ্নি’। তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার, শরৎস্মৃতি পুরস্কার ও মতিলাল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৭০ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন।