ঢাকার প্রখ্যাত ইউনানি চিকিৎসক, সাহিত্যসেবী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ হাকিম হাবিবুর রহমান ১৮৮১ সালের ২৩ মার্চ ঢাকার ছোট কাটরা মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। ইউনানি চিকিৎসাশাস্ত্রের খ্যাতিমান চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি তিনি ঢাকার সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে খুবই প্রভাবশালী ছিলেন। লখনৌ, দিল্লি ও আগ্রাতে ইউনানি চিকিৎসার প্রশিক্ষণ লাভের পর তিনি ১৯০৪ সালে চিকিৎসা পেশায় আত্মনিয়োগ করেন। হাকিম হাবিবুর রহমান ছিলেন নওয়াব খাজা সলিমুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। ১৯৩০ সালে তিনি ঢাকায় ‘তিব্বিয়া হাবিবিয়া কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। পূর্ববাংলার মানুষকে ইউনানি চিকিৎসাসেবা দানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাকে ১৯৩৯ সালে ‘শেফা-উল-মুলক’ খেতাবে ভূষিত করেন। তিনি ১৯০৬ সালে উর্দু মাসিকপত্র ‘আল-মাশরিক’ সম্পাদনা করেন। এ ছাড়া ১৯২৪ সালে তিনি খাজা আদেলের সঙ্গে যৌথভাবে ‘যাদু’ নামে অপর একটি উর্দু মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। পত্রিকাটি মাত্র দুই বছর টিকেছিল। হাকিম হাবিবুর রহমান প্রায়ই ‘আহসান’ ছদ্মনামে লিখতেন। তার অগণিত লেখার মধ্যে রয়েছে ‘আল-ফারিক’, ‘হায়াত-ই-সুকরত’, ‘আসুদগান-ই-ঢাকা’ এবং ‘ঢাকা পাঁচাশ বারাস পহলে’। সর্বশেষ উল্লিখিত বইটিতে রয়েছে তার সময়ে ঢাকা শহরের অধিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের প্রাঞ্জল বর্ণনা। তিনি পা-ুলিপি, মুদ্রা, যুদ্ধাস্ত্র প্রভৃতির সংগ্রহকারী হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তার অধিকাংশ রচনা ও সংগ্রহ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে ‘Habibur Rahman Collections’ শিরোনামে সংরক্ষিত আছে। ১৯৩৬ সালে তিনি ঢাকা জাদুঘরকে তার সংগৃহীত স্বর্ণ ও রৌপ্যমুদ্রা মিলিয়ে মোট ২৩১টি প্রাচীন মুদ্রা দান করেন। ১৯৪৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।