১৯৮৮ সালের ১২ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন বিখ্যাত বাঙালি লেখক সমরেশ বসু। তার জন্ম ১৯২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর তৎকালীন পূর্ববাংলার বিক্রমপুরে। কালকূট ও ভ্রমর তার ছদ্মনাম। তার রচনায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, শ্রমজীবী মানুষের জীবন ও যৌনতার সুনিপুণ বর্ণনা ফুটে উঠেছে। তার শৈশব কাটে বাংলাদেশের বিক্রমপুরে আর কৈশোর কাটে কলকাতার উপকণ্ঠ নৈহাটিতে। লেখালেখিতে তিনি বিচিত্র বিষয় ও আঙ্গিকে আমৃত্যু সক্রিয় ছিলেন। দেবেশ রায় তার মৃত্যুতে লেখা রচনাটির শিরোনামই দিয়েছিলেন, ‘জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি লেখক এবং পেশাদার লেখক’। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি ইছাপুরের গান ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। ট্রেড ইউনিয়ন ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এ কারণে তাকে ১৯৪৯-৫০ সালে জেলও খাটতে হয়। জেলখানায় তিনি তার প্রথম উপন্যাস ‘উত্তরঙ্গ’ রচনা করেন। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি লেখালেখিকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। ‘অমৃত কুম্ভের সন্ধান’, ‘কোথায় পাব তারে’সহ অনেক উপন্যাস তিনি কালকূট ছদ্মনামে লিখেছেন। সমরেশ বসুর লেখা ছোটগল্পের সংখ্যা ২০০ এবং উপন্যাসের সংখ্যা প্রায় ১০০। তিনি আনন্দ পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার লাভ করেছেন। ছদ্মনামে লেখা ‘শাম্ব’ উপন্যাসের জন্য তিনি ১৯৮০ সালের আকাদেমি পুরস্কার পান। ১৯৮৮ সালের ১২ মার্চ ৬৩ বছর বয়সে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালেও তার লেখার টেবিলে ছিল ১০ বছরের অমানুষিক শ্রমের অসমাপ্ত ফসলশিল্পী রামকিংকর বেইজের জীবনী অবলম্বনে উপন্যাস ‘দেখি নাই ফিরে’।