শরীফা বুলবুল::আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। আমাদের চিরগৌরবের দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে লাল-সবুজের পতাকার স্থান পাওয়ার দিন আজ। বাংলাদেশ নামে নতুন একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের আত্মপ্রকাশ ঘটে এদিন। ১৯৭১ সালের দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শেষে এই দিন বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল বীর বাঙালি।
এই ডিসেম্বরের কুয়াশা ঢাকা বাংলার আকাশে উদিত হয়েছিল স্বাধীনতার সূর্য, উড্ডীন হয়েছিল লাল-সবুজ পতাকা। বাতাসে অনুরণন তুলেছিল অগণিত কণ্ঠের সুর ‘আমার সোনার বাংলা/ আমি তোমায় ভালোবাসি।’ আজকের দিনটি তাই একদিকে যেমন এ দেশের মানুষের কাছে চিরকালের, চিরগৌরব ও আনন্দের; তেমনি একই সঙ্গে স্বজন হারানোর বেদনায় নীল।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অবনত মস্তকে অস্ত্র নামিয়ে রেখে গ্লানিময় আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছিল ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)। যে সব শ্রেষ্ঠ সন্তানের প্রাণের বিনিময়ে এই পতাকা ও মানচিত্র এসেছে, তাদের শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়েই এই দিবসের মহিমা প্রকাশ পাবে।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলী গনিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করার পরও ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পশ্চিম পাকিস্তানিরা ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে। এরই এক পর্যায়ে পাকিস্তানি হানাদার সেনারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঘুমন্ত নিরীহ নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর চালায় ইতিহাসের ঘৃণ্যতম গণহত্যা।
বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেছেন, লাখো শহিদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরমতসহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল ভোগ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গৌরবময় এবং স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীনতার স্বাদ এবং জাতি হিসেবে নিজস্ব পরিচিতি। লাখ লাখ শহিদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়ে যাই আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।(সৌজন্যে:দৈনিক ইত্তেফাক)