শিক্ষাবিদ, লেখক, সংস্কৃতি ও সমাজকর্মী কবীর চৌধুরী ১৯২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা খান বাহাদুর আবদুল হালিম চৌধুরী এবং মা উম্মে কবীর আফিয়া চৌধুরী। পৈতৃক নিবাস নোয়াখালীর চাটখিল থানার গোপাইরবাগ গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ (সম্মান) ও এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৭-৫৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমেরিকান সাহিত্য অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৬৫ সালে সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ, রাজশাহী সরকারি কলেজ ও ঢাকা কলেজে ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যাপনা করেন। বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ ও ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি কিছুকাল তিনি শিক্ষা বিভাগ ও সরকারের প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বাংলা একাডেমির পরিচালক এবং পরে মহাপরিচালক ছিলেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ন্যাশনাল এডুকেশন কাউন্সিলের প্রথম সদস্য সচিব পদে যোগ দেন। ১৯৭৩ সালে তিনি শিক্ষা ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে যোগ দেন। ১৯৭৪ সালে স্বেচ্ছায় সরকারি চাকরিতে ইস্তফা দেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক পদে যোগদান করে ১৯৮৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৯৮ সালে জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদায় ভূষিত করা হয়। রচিত, সম্পাদিত ও অনূদিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই শতেরও বেশি। আজীবন ছিলেন প্রগতিশীল সমাজতান্ত্রিক মতবাদে বিশ্বাসী এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাজনীতির অনুসারী। তিনি নানা প্রগতিশীল সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, এশিয়াটিক সোসাইটির ট্যাগোর পিস অ্যাওয়ার্ডসহ দেশ ও বিদেশে বহু সম্মাননা লাভ করেছেন। কবীর চৌধুরী ২০১১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।