শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক মুনীর চৌধুরী ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর মানিকগঞ্জ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস নোয়াখালী। বাবা খানবাহাদুর আবদুল হালিম চৌধুরী ছিলেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে বিএ অনার্স ও এমএ পাস করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাতত্ত্বে এমএ ডিগ্রি নেন। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রথম ছাত্রসভায় তিনিও বক্তৃতা করেন। ১৯৪৯ সালে খুলনার ব্রজলাল কলেজে ইংরেজির অধ্যাপক হন। ১৯৫০ সালে জগন্নাথ কলেজে যোগ দেন এবং সে বছরই ইংরেজির প্রভাষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯৫২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষকদের প্রতিবাদ সভা আহ্বান করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন ও চাকরিচ্যুত করা হয়। প্রায় দুই বছর তাকে দিনাজপুর ও ঢাকা কারাগারে বন্দি রাখা হয়। বন্দি অবস্থায় ১৯৫৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দিদের অভিনয়ের জন্য লেখেন ‘কবর’ নামের একাঙ্কিকা। ১৯৬৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রধান হন। প্রথম জীবনে তিনি বেশ কিছু ছোটগল্প লিখলেও তার প্রধান আকর্ষণ ছিল নাটকের প্রতি। ‘মীর-মানস’ ও ‘তুলনামূলক সমালোচনা’ বই দুটি সমালোচনা সাহিত্যে মূল্যবান সংযোজন। ১৯৬৫ সালে কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে বাংলা টাইপরাইটারের জন্য উন্নতমানের কি-বোর্ড উদ্ভাবন করেন, যার নাম ‘মুনীর অপটিমা’। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর তাকে আলবদর বাহিনী অপহরণ করে এবং সম্ভবত ওই দিনই তিনি শহীদ হন।