আমরা কেউ কারও শত্রু হবো না’
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংগৃহীত ছবি
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বৈষম্যহীন, শোষণহীন, কল্যাণময় এবং মুক্ত বাতাসের রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিলেন, আমি তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হবে পারস্পারিক সম্মান, আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা।’
অন্তর্বর্তী সরকার সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এখন থেকেই বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই, যেন জনগণই সব ক্ষমতার উৎস হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে একটা মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমি খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পেয়ে গর্বিত ও অনুপ্রাণিত। নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করলাম, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীয় সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি। অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরাধিকারীদের কল্যাণার্থে যা কিছু প্রয়োজন তা করার জন্য আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ী এবং অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।’
সশস্ত্র বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আজ খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের উত্তরাধিকারীদের সম্মাননা প্রদানের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্য আমি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সব বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারসহ সমগ্র দেশবাসীর সুখ, শান্তি ও সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। মহান আল্লাহ আমাদের সবার সহায় হউন। বাংলাদেশ চিগড়তে হবে।’
এর আগে সকালে সশস্ত্র বাহিনী দিবসে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা শিখা অনির্বাণে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা শিখা অনির্বাণে পৌঁছালে সেখানে তিন বাহিনীর প্রধান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।
শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধান উপদেষ্টা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে গমন করেন। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং মহাপরিচালকবৃন্দ। সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। পরে প্রধান উপদেষ্টা আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীগণকে সংবর্ধনা দেন।