প্রখ্যাত ভারতীয় রাজনীতিবিদ পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর জন্ম ভারতের গঙ্গা নদীর তীরে এলাহাবাদ শহরে ১৪ নভেম্বর, ১৮৮৯ সালে। তার বাবার নাম মতিলাল নেহরু ও মা স্বরূপ রানী। তিনি বাড়িতে পাশ্চাত্য সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠেন এবং ইংরেজির সঙ্গে তাকে হিন্দি ও সংস্কৃত শিক্ষা দেওয়া হয়। তৎকালীন ভারতের সবচেয়ে আধুনিক স্কুলে পড়ার পর ১৫ বছর বয়সে তাকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। প্রকৃতিবিজ্ঞানের ওপর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে লেখাপড়া শেষে সেখানেই ব্যারিস্টারি পড়তে শুরু করেন। ছাত্রাবস্থায়ই ভারতীয় ছাত্র সংসদের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। দেশে ফেরার পর একজন আইনজ্ঞ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ভারতীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। গান্ধীর দর্শন ও নেতৃত্ব তাকে গভীরভাবে আকৃষ্ট করে। গান্ধীর নীতি ছিল সত্যাগ্রহ ও অহিংসা। চাম্পারান আন্দোলনের সময় তিনি গান্ধীর সঙ্গে পরিচিত হন এবং তাকে সাহায্য করেন। তার প্রভাবে নেহরু পরিবার তাদের ভোগ-বিলাসের জীবন ত্যাগ করে এবং খাদির তৈরি কাপড় পরা ও ভগবদগীতা পাঠ এবং যোগব্যায়াম শুরু করে। তিনি ব্যক্তিগত জীবনেও গান্ধীর কাছ থেকে পরামর্শ নিতেন এবং গান্ধীর সঙ্গেই বেশিরভাগ সময় কাটাতেন। কালক্রমে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা এবং স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, পণ্ডিত ও কূটনীতিবিদ হিসেবে তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। লেখক হিসেবেও তিনি ছিলেন বিশিষ্ট। ইংরেজিতে লেখা তার তিনটি বই ‘একটি আত্মজীবনী’, ‘বিশ^ ইতিহাসের কিছু চিত্র’ এবং ‘ভারত আবিষ্কার’ চিরায়ত সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করেছে। ১৯৬৪ সালের ২৭ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।