সাংবাদিক ও সাহিত্যিক মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী ১৮৯৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার বাঁশদহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মুনশী মোহাম্মদ ইব্রাহিম ছিলেন পল্লী চিকিৎসক। বাবার ডাক্তারখানায় সে সময়ের নানা পত্রিকা আসত। পত্রিকার বিভিন্ন লেখা নিয়ে তর্কবিতর্ক চলত, যা কিশোর ওয়াজেদকে খুব প্রভাবিত করে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, বড় হয়ে সাংবাদিকই হবেন। বাঁশদহের মধ্যে ইংরেজি বিদ্যালয় ও বাবুলিয়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে বৃত্তিসহ এন্ট্রান্স পাস করে তিনি কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজে এফএ শ্রেণিতে ভর্তি হন। তবে মওলানা আকরম খাঁর উদ্দীপনায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে পরীক্ষার আগেই কলেজ ছাড়েন, যোগ দেন ব্রিটিশবিরোধী অসহযোগ আন্দোলনে। পরে সাংবাদিকতায় এসে ১৯২০ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত কলকাতায় মুসলিম মালিকানাধীন বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তার সম্পাদিত কাগজগুলোর মধ্যে আছে ‘মোহাম্মদী’, ‘নবযুগ’, ‘সেবক’, ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’, ‘The Musalman’, ‘খাদেম’, ‘সওগাত’, ‘সহচর’, ‘বুলবুল’ ও ‘সাম্যবাদী’। প্রাঞ্জল ও সাবলীল ভাষায় লেখা তার প্রবন্ধগুলো জনপ্রিয় ছিল। প্রবন্ধের সংখ্যা প্রায় ২০০। ছোট ও মাঝারি আকারের জীবনী, অনুবাদ মিলিয়ে তার আটটি গ্রন্থ পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে আছে ‘মরুভাস্কর’, ‘ছোটদের হজরত মোহাম্মদ’, ‘মোহাম্মদ আলী’, ‘ডন কুইজসোটের গল্প’ এবং ‘মহামানুষ মুহসীন ও সৈয়দ আহমদ’। বাংলা একাডেমি থেকে তার রচনাবলির অংশবিশেষ দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ছিলেন যুক্তিবাদী মন ও পরিচ্ছন্ন চিন্তার অধিকারী। ১৯৫৪ সালের ৮ নভেম্বর নিজ গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।