বিশ্বনেতাদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
প্রান্তডেস্ক:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ম্যাজিক ফিগার থেকে আর মাত্র ৩ ভোট দূরে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২৭০ ইলেকটোরাল ভোটের মাইলফলক স্পর্শ করলেই তিনি হতে যাচ্ছেন ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বুধবার (৬ নভেম্বর) ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে রিপাবলিকান পার্টির প্রধান কার্যালয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে এক বিজয়ী ভাষণ দিয়েছেন তিনি। সেখানে তার নির্বাচনী জয়কে তিনি ‘রাজনৈতিক বিজয়’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এরপর থেকে তাকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করেছেন বিশ্বনেতারা। এ তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, হাঙ্গেরির নেতা ভিক্টর অরবান ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও রয়েছেন। বুধবার (৬ নভেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও হিন্দুস্তান টাইমস।
এ ছাড়া হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানও একই রকম বার্তায় অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের বিজয় মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রত্যাবর্তন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার বিশাল জয়ের জন্য অভিনন্দন। বিশ্বের জন্য একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিজয়।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি বার্তা পোস্ট করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদি লিখেছেন, ঐতিহাসিক নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আমার বন্ধু ট্রাম্পকে আন্তরিক অভিনন্দন। ট্রাম্পের ঘনিষ্ট বন্ধু হিসেবে পরিচিত নরেন্দ্র মোদি। বেশ কয়েকদিন আগেও ট্রাম্প মোদিকে এক এক্স বার্তায় ভালো বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পোস্টে মোদি ট্রাম্পের আগের মেয়াদের সাফল্যের প্রশংসা করে বলেছেন, ভারত-মার্কিন ব্যাপক বৈশ্বিক ও কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করতে আমাদের সহযোগিতার পুনর্নবীকরণের জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। আসুন একসঙ্গে আমাদের জনগণের উন্নতির জন্য, বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য কাজ করি।
অভিনন্দন বার্তায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, সম্মান এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার সাথে আরও শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আমরা চার বছর ধরে একসাথে কাজ করতে প্রস্তুত।
আর অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার বলেছেন, আমাদের ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্ককে আরও সম্প্রসারিত এবং শক্তিশালী করার জন্য বিশ্বব্যাপী সকল চ্যালেঞ্জ একসাথে সফলভাবে মোকাবিলা করার জন্য উন্মুখ তিনি।
সাবেক রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ট্রাম্পের এই বিজয় ইউক্রেনের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। যদিও ট্রাম্প এই যুদ্ধের জন্য মার্কিন আর্থিক সহায়তা কতটা কমাতে পারবেন সে বিষয়ে তিনি অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেন।
এদিকে হাঙ্গেরির উগ্র ডানপন্থি নেতা ভিক্টর অরবান বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ের পথে রয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি শেয়ার করে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, শুভ সকাল হাঙ্গেরি! একটি দুর্দান্ত জয়ের পথে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সব ভোট গণনা শেষের আগেই প্রাথমিক ফলাফল বিশ্লেষণে এ তথ্য জানিয়েছে ফক্স নিউজ। তাদের হিসাব-নিকাশ মতে, আর কোনোভাবেই কমলা হ্যারিসের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এরপরই মঞ্চে হাজির হয়ে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ট্রাম্প। তার ভাষণে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
সর্বশেষ খবরে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের প্রাপ্ত ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা ২৭৭। অপরদিকে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ২২৬টি ভোট। দেশটিতে মোট ৫০টি অঙ্গরাজ্যে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। জিততে হলে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেতে হবে। তা ইতোমধ্যে ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন এবং আরও কিছু রাজ্যের ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তার দখলে যাওয়ার খুব সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
ট্রাম্পের জয়ের খবরে বিভিন্ন রাজ্যে উৎসবে মেতেছেন তার সমর্থকরা। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের প্রধান কার্যালয় থেকে বিবিসি জানিয়েছে, ফক্স নিউজ যখন প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের অনুমান ঘোষণা করছিল তখন হলরুমে উপস্থিত সমর্থকরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। তাদের কান ফাটানো জয়ধ্বনিতে এক অন্যরকম পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ সময় অনেক সমর্থক আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ট্রাম্পের নামে স্লোগান দিতে থাকেন।
অপরদিকে কমলা এখনও হাল ছাড়ছেন না। তার প্রচারশিবিরের সহসভাপতি সেড্রিক রিচমন্ড বলেন, ‘আমাদের এখনো ভোট গণনা করা বাকি আছে। আমাদের এমন রাজ্য রয়েছে যেগুলোর ফল এখনো নিশ্চিত নয়। আমরা রাতেও লড়াই চালিয়ে যাব। যাতে প্রতিটি ভোট গণনা হয়। প্রতিটি কণ্ঠস্বর যাতে নিশ্চিত করা হয়। সুতরাং আপনি (সমর্থক) আজ রাতে ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে ভাষণ শুনতে পাবেন না। তবে আগামীকাল তিনি ভাষণ দেবেন।’