প্রান্তডেস্ক:‘এখন যে সরকার এসেছে (অন্তর্বর্তী সরকার), আমরা তাদের সমালোচনা করছি। কারণ তারা যে সুযোগ ও সময়ে হাজির হয়েছিল, বাংলাদেশকে একটা অত্যন্ত শক্তিশালী দেশ হিসেবে গড়তে তরুণদের যে বিপ্লব উঠেছিল, এটার মধ্য দিয়ে একটি নতুন গঠনতন্ত্র ও বাংলাদেশকে নতুনভাবে গঠন করার মধ্য দিয়ে, একটি শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠন করার যে সুযোগটা আমরা হাতে পেয়েছিলাম– সেই মুহূর্তটা যেকোনও কারণে হোক আমরা হারিয়ে ফেলেছি। সেই মুহূর্তটা তরুণরা আবার চেষ্টা করছে ফিরিয়ে আনতে। আমরা জিতবো, ইনশাল্লাহ। আমাদের কেউ হারাতে পারবে না।’
শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁন হলে বাংলাদেশ কংগ্রেস আয়োজিত ‘দ্য প্যালেস্টাইন-ইসরায়েল ক্রাইসিস: টুয়ার্ডস অ্যা সল্যুশন’ শীর্ষক সেমিনারে কবি ও চিন্তাবিদ ফরহাদ মজহার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরোধীদল যারা ছিল, তারা ভেবেছিল যুক্তরাষ্ট্র তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। তারা আমাদের তৎপরতাকে ভালোভাবে দেখেনি। আমার বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন হয়েছে। যারা বলেছে, আমরা নাকি বিএনপিকে ভাঙতে চাই, আমাদের ডিজিএফআই টাকা দিয়েছে। যারা বলেছে, তাদের সঙ্গে মোসাদের সম্পর্ক হয়েছে বলে পত্র-পত্রিকায় খবর এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেই দলগুলোকে বলবো– তখন যে ভুল করেছেন, আমার বিরুদ্ধে ট্রল করেছেন, আপনাদের কর্মীদের আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন। আপনারা এখন কী করছেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি– আপনার চুপ্পুকে ক্ষমতায় রাখতে চান। যে ফ্যাসিস্ট শক্তির এজেন্ট, যাকে এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রে রেখেছেন, আপনারা সেই দল। যে আগে বলেছে, আমার কাছে পদত্যাগপত্র আছে, আর এখন অস্বীকার করছে- তাকে রাখার জন্য আপনার এত অস্থির হয়ে গেছেন। আপনারা ভেবেছেন যুক্তরাষ্ট্র আপনাদের ক্ষমতায় বসাবে। এই তরুণরা দেখিয়ে দিয়েছে, তারা আপনাদের থেকে রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় অনেক অগ্রসর।’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধে জয়ী হতে হবে। এই যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতি হলো ৫ আগস্ট। এই যুদ্ধ শুরুর ভূমিকা হলো ৫ আগস্ট। এই যুদ্ধ আন্তর্জাতিক, এই যুদ্ধ আঞ্চলিক। যদি দিল্লী মনে করে– এই যুদ্ধ তারা থামিয়ে দিতে পারবে। চুপ্পুর কাছে ক্ষমতা দিয়ে এবং কিছু কিছু শক্তি তাদের সঙ্গে মিলে তরুণদের দমন করতে পারবে, তারা দুঃস্বপ্ন দেখছে। তরুণরা দেখিয়ে দেবে- এই দুঃস্বপ্ন থেকে কীভাবে বাস্তবে ফিরে আসতে হয়।’
এই চিন্তাবিদ আরও বলেন, ‘ক্ষমতা মানেই গণক্ষমতা। গণক্ষমতা কী আমরা ৫ তারিখে দেখেছি। সেই গণক্ষমতাকে গাঠনিক ক্ষমতায় রূপান্তর করতে পারিনি। গাঠনিক ক্ষমতা মানে নতুন একটি বাংলাদেশ গঠন করার ক্ষমতা। নতুন একটি গঠনতন্ত্র প্রণয়নের ক্ষমতা। যার থেকে আমাদের বিভ্রান্ত করা হয়েছে। আমাদের অনেককে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। আমি আশা করবো তারা সেই বিভ্রান্তি কাটিয়ে উঠবে। গণআন্দোলন থেকে গণশক্তি, গণশক্তি থেকে গাঠনিক ক্ষমতা, গাঠনিক ক্ষমতার এই যে রূপান্তর, গাঠনিক ক্ষমতা তৈরির মধ্য দিয়ে নতুন গঠনতন্ত্র তৈরির প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় একটু ছেদ ঘটেছে। আমরা আবার সেই প্রক্রিয়ায় ফিরে যাবো, ইনশাল্লাহ। আমাদের কেউ রুখতে পারবে না, কারণ তরুণদের পিছনে বাংলাদেশের জনগণ আছে।’