১৮৭১ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন গীতিকার, গায়ক এবং কবি অতুলপ্রসাদ সেন। আদিনিবাস ছিল ফরিদপুরের দক্ষিণ বিক্রমপুরের মগর গ্রামে। ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়ে মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্তের কাছে বেড়ে ওঠেন। এসব গুণ অতুলপ্রসাদের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়। অতুলপ্রসাদ প্রবেশিকা পাস করে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হলেও বিলেত চলে যান এবং ব্যারিস্টার হয়ে ফেরেন। দেশে ফিরে কলকাতা ও রংপুরে কিছুদিন আইন ব্যবসা করেলক্ষৌন চলে যান। সেখানেই আইনজীবী হিসেবে খ্যাতি পান। কিশোর বয়সে তার সংগীত সাধনা শুরু। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্তরঙ্গ সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন। বাংলা গানে ঠুমরির প্রচলন যারা ঘটান তিনি তাদের পথিকৃৎ। তার তৈরি সুরে কীর্তন ও বাউল ঢঙের প্রভাব দেখা যায়। তিনি ভৈরবী, খাম্বাজ, পিলু, বেহাগ, কাফিসহ বিভিন্ন রাগের ওপর সংগীত রচনা করেছেন। তার লেখা গানে প্রকৃতি এসেছে ঘুরেফিরে। স্নিগ্ধ, কোমল শব্দ চয়ন করে তার সঙ্গে মিল রেখে সুর সৃষ্টিতে তিনি দক্ষ ছিলেন। তার রচিত গানগুলো তিন ভাগে ভাগ করা যায় স্বদেশি সংগীত, ভক্তিগীতি ও প্রেমের গান। তার ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা’ স্বদেশি ঘরানার গানটি ষাটের দশকে পূর্ববঙ্গের বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের কর্মীদের উদ্দীপ্ত করত। তার রচিত গানের সংখ্যা প্রায় ২০০। তার গান নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘কয়েকটি গান’ ও ‘গীতিগুঞ্জ’ নামে দুটি সংকলন। জীবনে অর্জিত অর্থের বড় অংশই তিনি জনকল্যাণে ব্যয় করেছেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দান করে গেছেন। ১৯৩৪ সালের ২৬ আগস্ট লক্ষেèৗ শহরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সেখানে তার নামে সড়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় হলের নামকরণ হয়েছে।