১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন কবি ও গীতিকার রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। তার পৈতৃক নিবাস বাগেরহাটের মোংলা থানার মিঠাখালী গ্রামে। তার প্রকৃত নাম শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ। ‘রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’ নামটি তিনি নিজে গ্রহণ করেন। মা শিরিয়া বেগম। বাবা শেখ ওয়ালীউল্লাহ ছিলেন চিকিৎসক। রুদ্র ঢাকা ওয়েস্ট এন্ড হাই স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে বিএ অনার্স (বাংলা) ও ১৯৮৩ সালে এমএ পাস করেন। ছাত্রজীবনেই তার দুটি কাব্য ‘উপদ্রুত উপকূল’ (১৯৭৯) ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ (১৯৮১) প্রকাশিত হয়। এ দুটি কাব্য তাকে কবিখ্যাতি এনে দেয়। তিনি তার সময়ের সংস্কৃতিকে নিজ কবিতায় গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আকাক্সক্ষা তার কাব্যে প্রতিফলিত। রুদ্রের জনপ্রিয় কবিতা ‘আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই/আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি’ গভীর ইতিহাস-চেতনার ছাপ স্পষ্ট। কাব্যচর্চার পাশাপাশি সংগীত, নাটক, ছোটগল্প ও প্রবন্ধ রচনাতেও সমান উৎসাহী ছিলেন তিনি। তার কাব্যগ্রন্থ ‘ছোবল’, ‘দিয়েছিলে সকল আকাশ’, ‘মৌলিক মুখোশ’; গল্পগ্রন্থ ‘সোনালি শিশির’ ও নাট্যকাব্য ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’ উল্লেখযোগ্য। সাহিত্য-সাধনার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮০ সালে তিনি মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯১ সালের ২১ জুন রুদ্র ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।