১৯৩৮ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন প্রাবন্ধিক, চিন্তাবিদ ও সমাজসংস্কারক আবুল হুসেন। তার জন্ম ১৮৯৬ সালের ৬ জানুয়ারি যশোর জেলায়। তার বাবার নাম হাজি মোহাম্মদ মুসা। ১৯১৪ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। পরে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আইএ ও বিএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২০ সালে অর্থনীতিতে এমএ, ১৯২২ সালে বিএল ও ১৯৩১ সালে এমএল ডিগ্রি লাভ করেন। কলকাতার হেয়ার স্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯২১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিভাগের লেকচারার এবং মুসলিম হলের হাউজ টিউটর নিযুক্ত হন। ১৯৩২ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ছেড়ে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি পেশায় যোগদান করেন। মননশীল প্রবন্ধকার হিসেবে তিনি
কৃষক-সমাজের দুঃখ-দুর্দশার মুক্তির পথনির্দেশ করেন তার ‘বাংলার বলশী’ গ্রন্থে। রুশ বিপ্লবের প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ‘কৃষকের আর্তনাদ’, ‘কৃষকের দুর্দশা’ ও ‘কৃষি বিপ্লবের সূচনা’ শিরোনামে প্রবন্ধ রচনা করেন। ঢাকায় যে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন হয়, তাতে তিনিই নেতৃত্ব দেন। ১৯২৬ সালে গঠিত মুসলিম সাহিত্য সমাজের মুখপত্র ‘শিখা’ সম্পাদনা ও প্রকাশ করে এ আন্দোলনকে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন। কাজী আবদুল ওদুদ, কাজী মোতাহার হোসেন, ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ও আবুল ফজল তাকে এ কাজে সাহায্য করেন। ঢাকার রক্ষণশীল মুসলিম সমাজ থেকে বাধা এসেছিল। শেষে অবস্থা এরূপ দাঁড়ায় যে, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ত্যাগ করে কলকাতায় চলে যেতে বাধ্য হন। তিনি এ দেশের অসাম্প্রদায়িক সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম পথিকৃৎ।