হাসিনাকে উৎখাতে পাঁচ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র প্লট তৈরি করেছিল?
শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে নানা বিতর্ক। বিতর্কের সূত্রপাত করেছেন হাসিনা নিজেই। কখনো বলছেন তিনি পদত্যাগ করেছেন। কখনো বা বলছেন করেননি। সর্বশেষ অডিও ক্লিপেও একই সুরে কথা বলেছেন। বলছেন, তিনি পদত্যাগ করেছেন ঠিকই, কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী হয়নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ছাত্র- জনতার গণ বিপ্লবের পর সংবিধানের সবকিছু মেনে কি সরকার চলছে? এটা কিন্তু কেউই নিশ্চিত করে বলছেন না। সাংবাদিক আমীর খসরু বলছেন, বিপ্লব সংবিধান মেনে হয় না। বিপ্লবই সংবিধান তৈরি করে। হাসিনা বারবারই বলছেন, তাকে হটাতে আমেরিকার হাত ছিল। কিন্তু আমেরিকা বলছে, তারা এর সঙ্গে যুক্ত নয়। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানেই হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এই অবস্থায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে গার্ডিয়ান চাঞ্চল্যকর একটি খবর দিয়েছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমে অবশ্য এই খবর নেই। এখানে এ নিয়ে কোনো সময় জল্পনাও ছিল না। যদিও বিএনপিসহ বিরোধী রাজনীতিকরা ২০১০ সন থেকে জোরালো আন্দোলন শুরু করেন। কিন্তু তাদের লক্ষ্য হাসিল হয়নি।
পত্রিকাটি বলছে, পাঁচ বছর আগে থেকেই হাসিনাকে উৎখাতের প্লট তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্র। কিছু নথিপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করে তাদের এই ধারণাই হয়েছে। ২০১৯ সন থেকে যুক্তরাষ্ট্র হাসিনাকে উৎখাতের প্লট নিয়ে কাজ শুরু করে। এ নিয়ে পাঠকদের কৌতূহল থাকবে। আর সেটা বিবেচনায় নিয়েই দ্য সানডে গার্ডিয়ানের রিপোর্টটি এখানে উপস্থান করছি।
Documents show U.S. set in motion plan to oust Hasina শীর্ষক রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অপসারণের পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের প্রথম দিকেই। দ্য সানডে গার্ডিয়ানের হাতে আসা নথিগুলো সেদিকেই ইঙ্গিত করে। নথি মোতাবেক, এই কার্য সম্পাদনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত সংস্থাগুলোর ওপর ৷ মঙ্গোলিয়া (১৯৯৬), হাইতি (২০০১) এবং উগান্ডা (২০২১) এর পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) কাছে সর্বশেষ সাফল্য ‘বাংলাদেশ’ , এটি সফলভাবে ঢাকার শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে । দ্য সানডে গার্ডিয়ান শোতে দেওয়া অভ্যন্তরীণ নথি অনুসারে, ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি (এনইডি) এবং ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এর বৃহত্তর উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করেছে আইআরআই।নথিগুলি আরো দেখায় যে, কীভাবে ভারতের “হস্তক্ষেপ” প্রতিহত করার জন্য প্রকল্পটি প্রয়োজনীয় ছিল।
ওয়াশিংটন-ভিত্তিক আইআরআই-এর উদ্দেশ্য হলো- “গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার মাধ্যমে গণতন্ত্রের প্রচার করা এবং গণতান্ত্রিক শাসনকে উন্নত করার লক্ষ্যে ইউএসএআইডি অর্থায়িত প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নে অংশীদার হওয়া। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই), সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজ (সিআইপিই) এবং সলিডারিটি সেন্টারের পাশাপাশি এনইডির চারটি মূল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইআরআই একটি। একইভাবে, এনইডি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং প্রক্রিয়াগুলিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আইআরআই-কে অনুদান প্রদান করে। ১৯৮৩সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি বা এনইডি হল একটি বেসরকারী, অলাভজনক সংস্থা যা প্রাথমিকভাবে মার্কিন কংগ্রেস দ্বারা অর্থায়ন করা হয়। এটি স্বাধীনভাবে কাজ করে, পররাষ্ট্র দপ্তরের মাধ্যমে বার্ষিক বরাদ্দ পায়। ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)হল একটি সরকারি সংস্থা যা বিদেশী সহায়তা ও উন্নয়ন পরিচালনার সাথে সম্পৃক্ত ।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে ,ইউএসএআইডি এবং এনইডি থেকে অনুদান পাওয়ার পর আইআরআই, ঢাকায় শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন আনতে একটি কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করে। উল্লিখিত কর্মসূচির নামকরণ করা হয়েছিল “প্রমোটিং অ্যাকাউন্টেবিলিটি, ইনক্লুসিভিটি, এবং রেজিলিয়েন্সি সাপোর্ট প্রোগ্রাম” (PAIRS) এবং এটি ২২ মাস ধরে ২০২১ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত চলে। আইআরআই জানিয়েছে যে “বাংলাদেশের নাগরিকদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং কর্তৃত্ববাদ বিরোধী কণ্ঠকে প্রসারিত করার জন্য এই কর্মসূচীর প্রয়োজন ছিল। রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার জন্য সামাজিক ক্ষমতায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে আইআরআই নাগরিক-কেন্দ্রিক, স্থানীয় এবং অ-প্রথাগত ফোরামগুলিকে লালন করেছে । এর জন্য, আইআরআই ” সঙ্গীতশিল্পী, অভিনয় জগতের ব্যক্তিত্ব বা সংস্থাগুলিকে ১১ অ্যাডভোকেসি অনুদান প্রদান করেছে। যারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যাগুলিকে তুলে ধরতে ২২৫ টি শিল্পসামগ্রী তৈরি করেছে যা প্রায় ৪ লক্ষ বার দেখানো হয়েছে। এলজিবিটিআই, বিহারি এবং জাতিগত সম্প্রদায়ের তিনটি সুশীল সমাজ আইআরআই-কে ৭৭ জন কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিতে %