১৮৮৬ সালের ১৬ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন সনাতন ধর্ম সংস্কারক ও আধ্যাত্মিক মানবতাবাদী শ্রীরামকৃষ্ণ। তার জন্ম ১৮৩৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। শৈশবেই তার মধ্যে প্রকাশ পায় দিব্যভাব। বাবার মৃত্যুর পর কলকাতার ঝামাপুকুরে নিজস্ব টোলে তার পড়ার ব্যবস্থা হয়। পরে রানী রাসমণি প্রতিষ্ঠিত দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে রামকুমার পূজার ভার পেলে তিনি মন্দিরে স্থান পান। এখানে কালীমূর্তির পূজায় ভক্তিগীতি গাওয়ার সময় তিনি প্রায়ই অচেতন হয়ে পড়তেন। কালক্রমে এখানেই কালীসাধনায় তার সিদ্ধিলাভ ঘটে। তিনি স্ত্রী সারদা দেবীকে আধ্যাত্মিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ করেন, যা অচিরেই তাকে ‘আধ্যাত্মিক জননী’ পদে উন্নীত করে। তার ১২ বছরের তপস্যাজীবনে তিনি দুজন গুরুর দীক্ষা লাভ করেন। দীক্ষা লাভের পর তার নাম হয় শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস। শুধু সনাতন ধর্মমতভিত্তিক সাধনায়ই আবদ্ধ থাকেননি তিনি, ইসলাম ও খ্রিস্টধর্মের আরাধনা পদ্ধতিকেও তিনি জানার চেষ্টা করেন। একই সঙ্গে হযরত মুহম্মদ (সা.) ও যিশুখ্রিস্ট প্রবর্তিত ধর্মীয় ধারা পর্যবেক্ষণ করেন। তার মতে, সব ধর্মেই জীবনের উদ্দেশ্য ঈশ্বর উপলব্ধি। ধর্মগুলোর পথ ভিন্ন হলেও সবারই উদ্দিষ্ট এক ও অভিন্ন, ঈশ্বরের নৈকট্য লাভ। তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতিতে গভীর বিশ্বাসী ছিলেন। তার শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ তারই ধর্মীয় আদর্শ জগদ্বাসীকে শুনিয়ে গেছেন।