প্রান্তডেস্ক:গতকাল বৃহস্পতিবার ডব্লিউএইচও সতর্ক করতে না করতেই ইউরোপে অতি সংক্রামক নতুন ধরনের মাঙ্কিপক্স বা এমপক্স স্ট্রেন সনাক্ত হয়েছে। সুইডেনের জনস্বাস্থ্য সংস্থা এ কথা জানিয়েছে। আফ্রিকার বাইরে সুইডেন যখন নতুন ধরনের প্রথম সংক্রমণের ঘোষণা দিয়েছে তখন ডিআর কঙ্গোতে এ রোগে শত শত মানুষ মারা গেছে।সুইডেনের ওই ব্যক্তি সম্প্রতি আফ্রিকার কোনো একটি অঞ্চলে ছিলেন।
সেখানেই তিনি আক্রান্ত হন। আফ্রিকার ওই অঞ্চলে সম্প্রতি এমপক্স ক্লেইড ১ ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। যেদিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আফ্রিকায় এমপক্স ‘খুব উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সেদিনই সুইডেনে এই রোগ ধরা পড়ে।জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বুরুন্ডি, কেনিয়া, রুয়ান্ডা ও উগান্ডায় ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন ছিল।
সুইডেনের জনস্বাস্থ্য সংস্থা বৃহস্পতিবার এএফপিকে জানিয়েছে, তারা ক্লেড ১বি সাবক্লেডে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। ভাইরাসের এই নতুন স্ট্রেন ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিআরসিতে বেড়েছে। সংস্থাটি একটি পৃথক বিবৃতিতে বলেছে, ‘স্টকহোমে একজন ব্যক্তির শরীরে ক্লেড১ ভেরিয়েন্টের এমপক্স সনাক্ত করা হয়েছে। আফ্রিকা মহাদেশের বাইরে এটিই প্রথম ঘটনা।
রাজ্যের মহামারী বিশেষজ্ঞ ম্যাগনাস গিসলেন বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আফ্রিকার সেই অংশে যেখানে এমপিক্স ক্লেড ১- এর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে এবং সফরের সময় ওই ব্যক্তি সংক্রামিত হয়।’
সুইডেনের জনস্বাস্থ্য সংস্থা আরো বলেছে, ‘আক্রান্ত ব্যক্তি স্টকহোমে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। তবে সুইডেনে তিনি চিকিৎসা নেওয়ার মানেই এই নয় যে, বৃহত্তর পরিসরে মানুষের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে।’ কোপেনহেগেনে ডব্লিউএইচওর ইউরোপীয় আঞ্চলিক কার্যালয় বলেছে, ঘটনাটি কীভাবে সর্বোত্তমভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়ে তারা সুইডেনের সঙ্গে আলোচনা করছে।আফ্রিকার দেশগুলোতে উদ্বেগজনক হারে ছড়িয়ে পড়েছে এমপক্স।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত দুই বছরের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো এমপক্সের কারণে জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। এর আগে ২০২২ সালে এর প্রাদুর্ভাবের কারণে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাসজনিত এ সংক্রমণ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআরসি) পর মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোতেও ছড়িয়েছে। মাংকিপক্স হিসেবে পরিচিত অত্যন্ত সংক্রামক এই রোগের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাব চলাকালে কঙ্গোয় অন্তত ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস প্রথম পশু থেকে মানুষে সংক্রমিত হওয়ার পর এখন মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াচ্ছে। এমপক্স ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ যেমন, যৌন সম্পর্ক, গায়ে গা লাগা ও অন্য জনের খুব কাছে গিয়ে কথা বলা বা নিঃশ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে ছড়ায়। এই রোগের সংক্রমণে জ্বরের মতো লক্ষণ দেখা দেয়, চামড়ায় ক্ষত তৈরি হয় আর এটি প্রাণঘাতী হতে পারে; এই রোগে আক্রান্ত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়।
সূত্র : এএফপি