১৮৪৫ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন কলকাতার সুবিদিত জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা, ব্যবসায় বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। তার জন্ম ১৭৯৪ সালে। তার জীবনযাপন ছিল রাজসিক ও জাঁকজমকপূর্ণ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা এবং দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবা ছিলেন। কিছুদিন আইন ব্যবসা করেছেন। পরে সুপ্রিম কোর্টে জমিদারের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। এভাবে নিজেও অর্থকড়ির মালিক হন এবং বিপুল জমিজমা কেনেন। ব্রিটেনে অবস্থানকালে তার সমকালীনরা তাকে প্রিন্স নামে অভিহিত করে এবং কলকাতায়ও তিনি প্রিন্স হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ১৮২৩ সালে চব্বিশ পরগনার নিমক মহলের দেওয়ান নিযুক্ত হন। ‘ইউনিয়ন ব্যাংক’-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালকও ছিলেন। কয়েকটি বীমা কোম্পানিরও পরিচালক হন। রেশম ও নীল রপ্তানি, কয়লাখনি, চিনিকল ও জাহাজ নির্মাণ ব্যবসা করেছেন। জনহিতকর অনেক কাজও তিনি করেছেন। সতীদাহ প্রথা বিলুপ্তির দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলন পরিচালনা করেন। ১৮১৯ সালে তিনি রামমোহন রায়ের ‘আত্মীয় সভা’র সদস্য হন। তার বিশ্বাস ছিল, ইংরেজরা এ দেশে উপনিবেশ করলে ভারতবর্ষের উন্নতিই হবে। ১৮২৯ সালে তিনি রামমোহনের সঙ্গে ‘বেঙ্গল হেরাল্ড’ ও ‘বঙ্গদূত’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। কলকাতায় পাবলিক লাইব্রেরি স্থাপনেও তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। ১৮৩৩ সাল থেকে আমৃত্যু তিনি হিন্দু কলেজের অন্যতম পরিচালক ছিলেন। ভারত সরকার তাকে ‘জাস্টিস অব দ্য পিস’ খেতাবে ভূষিত করে।