ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে নিয়ে প্রিন্স মাহমুদের গান
প্রিন্স মাহমুদ বলেন, ‘প্রথমে গানটি সুর করার পর আমার কাছে অতটা ভালো লাগেনি। তা ছাড়া ধীরেন্দ্রনাথ সম্পর্কে আমার আরও জানার দরকার ছিল। এ জন্য রেখে দিয়েছিলাম। এখন গানটির কথা ও সুর দুটোই হয়েছে। যে ট্র্যাকটি করেছি, ভালোই হবে আশা করছি।’
তিনি জানান, ২০০৩ বা ২০০৪ সালে তিনি ‘একুশ-বায়ান্ন’ ও ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে নিয়ে গানটির কথা ও সুর তৈরি করেন তিনি। ‘একুশ-বায়ান্ন’র কাজ শেষ করতে পারলেও তখন ‘শহীদ’র কাজটি আর শেষ করা হয়নি তার। তবে এবার গানটির ট্র্যাক প্রস্তুত। আর দু’একদিনের মধ্যেই এতে শিল্পীরা কণ্ঠ দেবেন। গানটি গাইবেন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন শিল্পী। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৬ মার্চ প্রকাশ হবে গানটি।
গুণী এই সুরস্রষ্টার কথা, ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ সম্পর্কে প্রথম কিছুটা জানতে পারি খুলনায় আমার ইংরেজি স্যার অসিত বরণ ঘোষের কাছ থেকে। এরপর বিভিন্নভাবে তার সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা করি। এরপর তাকে নিয়ে গান করার পরিকল্পনা করি। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথদের মতো মহানায়কদের আমরা ভুলে যাচ্ছি। এ প্রজন্মের অনেকেই তার সম্পর্কে জানেন না, চেনেন না। আমরা তাকে ভুলে গেছি, ভুলে যাচ্ছি, মনে রাখিনি। যারা ভাষার জন্য, দেশের জন্য ত্যাগ করেছেন, এভাবে চলতে থাকলে তাদের অনেকে ইতিহাস থেকে মুছে যাবেন। একদিন ইতিহাস মুখ ফিরিয়ে নেবে। যেটি জাতির জন্য, দেশের জন্য বেদনাদায়ক হবে।’ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের মতো ইতিহাসের আরও অনেক ভুলে যাওয়া নায়কদের নিয়ে গান করার ইচ্ছা আছে বলেও জানান এই সুরকার।
গানটিতে কারা কণ্ঠ দেবেন জানতে চাইলে প্রিন্স মাহমুদ বলেন, ‘আমি এ পর্যন্ত যেসব ব্যান্ড শিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছি, তাদের অনেকে গাইবেন। এ ছাড়া এতে অংশ নেবেন এ প্রজন্মের অনেকে। যেহেতু এটি একজন ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে একজন শহীদের গান, তাই সব প্রজন্মের শিল্পীদের মেলবন্ধন করে গানটি করতে চাইছি।’
উল্লেখ্য, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে সর্বপ্রথম বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তুলেছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসররা ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও তার ছোট ছেলে দিলীপকুমার দত্তকে ধরে নিয়ে যায়। পরে ময়নামতি সেনানিবাসে নিয়ে নির্যাতন করে তাদের হত্যা করা হয়। বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের অবদান চিরস্মরণীয়।