সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
প্রকাশিত হয়েছে : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ৩:৪৭ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ৬৭ বার পঠিত
প্রান্তডেস্ক:সাংবাদিক ও কলামিস্ট এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গত ২০২২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর নিজ শহর সুনামগঞ্জে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
পীর হাবিবুর রহমানের ভাই সাবেক সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ জানান, মৃত্যুবার্ষিকীতে শহরের হাছননগরের বাসায় কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। শহরতলির মাইজবাড়ি গ্রামে তাঁর কবর জিয়ারত এবং বিভিন্ন মসজিদে আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হবে।
২১ র অক্টোবরে ভারতের মুম্বাই নগরীর জাসলোক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ক্যান্সারমুক্ত হন পীর হাবিবুর রহমান। ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনামুক্ত হওয়ার পর কিডনি জটিলতার কারণে তাঁকে ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় তাঁকে। ৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টা ৮ মিনিটে তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৮৪ সালে সাংবাদিকতায় পীর হাবিবের হাতেখড়ি। ১৯৮৬ সালে অনার্স ও ১৯৮৭ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৯২ সালে ‘বাংলাবাজার পত্রিকা’র সূচনা পর্ব থেকে তাঁর পেশাদারি শুরু। তারপর দৈনিক ‘যুগান্তর’-এ সূচনা পর্ব থেকে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন। বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে হয়েছিলেন আলোচিত রিপোর্টার। ‘আমাদের সময়’, ‘আমাদের অর্থনীতি’ হয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের উপসম্পাদক পদে দীর্ঘদিন কাজ করেন। সর্বশেষ ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক। তিনি নিউজপোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগরে সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ রইছ আলী পীর ও মা সৈয়দা রাহিমা খানম। পীর হাবিব সুনামগঞ্জের সরকারি জুবিলী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। আট ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের সপ্তম সন্তান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ডায়না নাজনিন, ছেলে আহনাফ ফাহিম অন্তর, মেয়ে রাইসা নাজ চন্দ্রস্মিতা, বড় ভাই মতিউর রহমান পীর, ছোট ভাই পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ ও এক বোনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। পীর হাবিবুর রহমান তাঁর বলিষ্ঠ কলামে রাজনীতির অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ দ্বারা লাখো পাঠকের মনে জায়গা করে নিতে সক্ষম হন। তিনি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ছিলেন ‘ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র নির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক। রিপোর্টার জীবনে তিনি আওয়ামী লীগ বিটের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি পীর হাবিব উপন্যাস ও কবিতা লিখতেন। ‘রাজনীতির অন্দরমহল’, ‘জেনারেলের কালোসুন্দরী’, ‘বলিউডের ট্র্যাজিক প্রেম’, ‘এক্সক্লুসিভ’, ‘পোয়েট অব পলিটিক্স’, ‘ভিউজ আনকাট’, ‘বুনোকে লেখা প্রেমপত্র’, ‘মন্দিরা’, ‘খবরের বারান্দা’, ‘অব দ্য রেকর্ড’, ‘টক অব দ্য প্রেস’ ছিল তাঁর আলোচিত বই। সাংবাদিকতায় তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘প্রামাণ্য পীর হাবিবুর রহমান’ নামে একটি গ্রন্থ।