প্রান্তডেস্ক: গেল সেপ্টেম্বরে সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিলেও এবার সেটি কমে আসার আশঙ্কা করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রধান প্রধান গন্তব্যে রপ্তানি কমে আসা, জ্বালানি সংকট এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাবে এই হার কমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি। তাছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনিশ্চয়তার প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে প্রবৃদ্ধি কত কমতে পারে তার হিসাব এবারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
গতকাল মঙ্গলবার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের ডিসেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে এডিবি। ঐ প্রতিবেদনে এডিবি জানিয়েছে, গত অর্থবছর ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল, গত সেপ্টেম্বরে সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এটি এবার কমে আসবে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। গত এপ্রিলে প্রকাশিত পূর্বাভাস প্রতিবেদনে সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল এডিবি। সেপ্টেম্বরে সেটি বজায় রেখেছে সংস্থাটি। তবে বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদা কমে আসলে রপ্তানিতে প্রভাব পড়তে পারে এমন আশঙ্কা ছিল। চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে উঠেছিল। তবে সামনের দিকে এটি কমে আসার প্রত্যাশা করা হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্ববাজারে জ্বালানি বহির্ভূত পণ্যের দাম কমে আসার সুফল পাবে বাংলাদেশ।
সরকারের লক্ষ্যের চেয়ে কমিয়ে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের বিষয়ে এডিবি উল্লেখ করেছে, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, সরকারের ব্যয় কমিয়ে আনার প্রভাব থাকবে প্রবৃদ্ধিতে। তাছাড়া প্রধানত যেসব দেশে বাংলাদেশ রপ্তানি পণ্য পাঠায়, সেসব দেশে অর্থনীতি ধীর হয়ে পড়েছে। সে কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি ও উৎপাদন খাতে মাঝারি ধরনের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও নেপালে এখনো উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে।
বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে এডিবি বলেছে, নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতির হার প্রায় দুই অঙ্কের ঘরের কাছাকাছি ছিল। এডিবি আশা করে, আসন্ন মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি সহনীয় হতে পারে, যদি সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত থাকে। এছাড়া বাজারভিত্তিক মুদ্রানীতি প্রচলনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারের পণ্যের দাম কম থাকলেও মূল্যস্ফীতি কমতে পারে। এছাড়া ভালো ফলনও মূল্যস্ফীতি কমাতে পারে।এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে। ২০২৪ সালে তা কিছুটা কমে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে। অন্যদিকে এশিয়ার গড় মূল্যস্ফীতিও ২০২৩ সালে কিছুটা কমে সাড়ে ৩ শতাংশ হতে পারে। তবে ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে ২০২৪ সালে ভারতে ৬ শতাংশ এবং চীনে ৪ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এডিবি।