স্বাধীনতা সংগ্রমী লালা লাজপত রায় বৃটিশ পুলিশের লাঠিচার্জে গভীর ভাবে আহত হয়ে আজকের দিনে শহীদ হন
প্রান্তডেস্ক: লালালাজপত রায়(২৮ জানুয়ারি ১৮৬৫- ১৭ নভেম্বর ১৯২৮ )(ইংরেজি: Lala Lajpat Rai; পাঞ্জাবি: ਲਾਜਪਤ ਰਾਏ) একজন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী । তিনি পাঞ্জাব কেশরি নামেও পরিচিত। তিনি পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ও লক্ষ্মী বিমা কোম্পানী স্থাপন করেছিলেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের চরম পন্থীদলের লাল-বাল-পালের অন্যতম নেতা। ১৯২৮ সনে সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনিতে অংশগ্রহণ করেন । সেখানে তিনি পুলিশের লাঠিচার্জে গভীর ভাবে আহত হন। ১৯২৮ সালের ১৭ নভেম্বর তারিখে তাঁর মৃত্যু হয়।
জীবনী
১৮৬৫ সনের ২৮ জানুয়ারি তারিখে পাঞ্জাবে লালা লাজপত রায় জন্মগ্রহণ করেন।। তার পিতার নাম মুনসি রাধা কৃষ্ণণ আজাদ। তিনি কিছুসময়কাল হরিয়াণার রোহতক এবং হিসার শহরে উকালতি করেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের অন্যতম নেতা ছিলেন। বাল গঙ্গাধর তিলক ও বিপিন চন্দ্র পালের সহিত তিনি লাল-বাল-পাল নামেই বিখ্যাত ছিলেন। এই তিন নেতারাই ভারতে সর্বপ্রথম ব্রিটিশ থেকে ভারতের স্বাধীনতার দাবী করেন পরবর্তি সময়ে সমগ্র ভারতবাসী এই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ে। তিনি স্বামী দয়ানন্দ সরসত্বীর সহিত আর্য সমাজকে পাঞ্জাবে জনপ্রিয় করে তোলেন। তিনি অনেক স্থানে দুর্ভিক্ষের সময় শিবির স্থাপন করে লোকের সেবা করেছেন। ১৯২৮ সনের ৩০ অক্টোবর তারিখে তিনি সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনিতে অংশগ্রহণ করেন । সেখানে তিনি পুলিশের লাঠি চার্চে গভীর ভাবে আহত হন। গুরুতরভাবে আহত হয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘’আমার শরীরে করা ব্রিটিশের প্রহার, ব্রিটিশের ধংসের কারণ হয়ে উঠবে’’। ব্রিটিশের প্রহারে গুরুতরভাবে আহত হওয়ার ফলে ১৯২৮ সনের ১৭ নভেম্বর তারিখে তার মৃত্যু হয়।
লালা’র মৃত্যুর প্রতিশোধ
লালা’র মৃত্যুর ফলে সমগ্র দেশ উত্তেজিত হয়ে উঠে। চন্দ্রশেখর আজাদ, ভগৎ সিং, শিবরাম রাজগুরু ও সুখদেব থাপার ও অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরা লালাজির মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিজ্ঞা নেয়। ১৯২৮ সনের ১৭ ডিসেম্বর তারিখে এই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা লালা’র মৃত্যুর প্রতিশোধ স্বরুপ ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার সাংডর্সকে গুলি করে হত্যা করে। সাংডর্সকে হত্যা করার জন্য রাজগুরু, সুখদেব ও ভগত সিংকে ব্রিটিশ সরকারের কারাগার থেকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। এই ভাবে ভারতীয় রাজনীতিতে এক নতুন স্পন্দন সৃষ্টি হয়।
হিন্দী সাহিত্যের সেবা
লালা লাজপত রায় হিন্দী ভাষায় মধ্যযুগীয় হিন্দুত্ববাদী রাজা শিবাজী ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনী রচনা করেন। তিনি ভারতে ও বিশেষকরে পাঞ্জাবে পাঞ্জবী ভাষাকে হটিয়ে হিন্দী ভাষা প্রতিস্হাপনের ক্ষেত্রেও সহযোগীতা করেছিলেন।