এই দিনে:১০ অক্টোবর

১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ। তার জন্ম ১৯২২ সালের ১৫ আগস্ট চট্টগ্রামে। তার বাবার নাম সৈয়দ আহমদউল্লাহ। বাবার চাকরি সূত্রে তিনি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেন। ১৯৩৯ সালে কুড়িগ্রাম হাই স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিক, ১৯৪১ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৪৩ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ডিস্টিংকশনসহ বিএ পাস করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হলেও কোর্স শেষ করেননি। ফেনী হাই স্কুলে ছাত্র থাকাকালেই তার সাহিত্যচর্চার সূত্রপাত হয়। এ সময় তিনি হাতে লেখা পত্রিকা ‘ভোরের আলো’ সম্পাদনা করেন। ইংরেজি-বাংলা উভয় ভাষায় তার দক্ষতা ছিল। ১৯৪৫-৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতার দৈনিক স্টেটসম্যান পত্রিকার সাব-এডিটর ছিলেন। সওগাত, মোহাম্মদী, বুলবুল, পরিচয়, অরণি, পূর্বাশা প্রভৃতি পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হতো। দেশভাগের পর তিনি ঢাকায় এসে প্রথমে ঢাকা বেতার কেন্দ্রের সহকারী বার্তা সম্পাদক ও পরে করাচি কেন্দ্রের বার্তা সম্পাদক হন। ১৯৫১-৬০ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান সরকারের পক্ষে নানা দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০-১৯৬৭ সাল পর্যন্ত তিনি প্যারিসে পাকিস্তান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি এবং ১৯৬৭-৭১ সাল পর্যন্ত ইউনেস্কোর প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ছিলেন। গ্রাম ও সমাজ জীবনের ধ্রুপদী জীবনধারা উপজীব্য করে লিখিত তার ‘লালসালু’ উপন্যাস বিশেষ খ্যাতি পায়। তার অন্য দুটি উপন্যাস ‘চাঁদের অমাবস্যা’ ও ‘কাঁদো নদী কাঁদো’ বাংলা সাহিত্যে ব্যতিক্রমী সৃষ্টি। লেখার মাধ্যমে তিনি সমাজের কুসংস্কার, ধর্মীয় ভণ্ডামি, মানসিক ও চারিত্রিক স্খলন ইত্যাদি প্রতিভাসিত করেছেন। রাষ্ট্রীয় একুশে পদকসহ নানা পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন।