স্বার্থ ক্ষুণ্ন হলে বিদেশে সরকার হটানোর চেষ্টা করে যুক্তরাষ্ট্র

জন বোলটন গত বছর সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বিদেশে অভ্যুত্থান পরিকল্পনায় তিনি সহযোগিতা করেছেন। এবারের সাক্ষাৎকারে তিনি অভ্যুত্থান বা সরকার বদলের পরিকল্পনাগুলোর নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ও অন্য দেশের প্রভাব কমানোই উদ্দেশ্য বলে জানান।

জবাবে জন বোলটন বলেন, এটি নির্ভর করে যখন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়ে। ভেনিজুয়েলার ক্ষেত্রে মাদুরোর শাসনকে সমর্থন করেছিল কিউবানরা। আর আগে রাশিয়াও সমর্থন দিয়েছিল।চীনাদের সম্পৃক্ততা ছিল উল্লেখযোগ্য।
বোলটন বলেন, ‘আমাদের পশ্চিম গোলার্ধে মনরো মতবাদ এই বিদেশি প্রভাবগুলোকে দূরে রাখতে চায়। আর এ ক্ষেত্রে নীতি হলো ভেনিজুয়েলা, নিকারাগুয়া বা কিউবার জনগণকে তাদের দেশ নিজেদেরই চালানোর সুযোগ করে দেওয়া।’
বোলটনকে পরের প্রশ্নটি ছিল, ‘আপনি তাহলে ভেনিজুয়েলা, কিউবা, ইয়েমেন, সিরিয়া বা লিবিয়ায় অভিযান চালানো এবং সরকার উত্খাতের আহ্বান জানিয়েছিলেন?’
জবাবে বোলটন বলেন, ‘না। বিষয়টি হলো ইরানে পরমাণু অস্ত্র পাওয়া থেকে আয়াতুল্লাহকে থামাতে হবে।’
এ পর্যায়ে টিআরটি ওয়ার্ল্ডের সাংবাদিক বলেন, ‘কিন্তু আপনি কি সরকার বদলাতেও চেয়েছিলেন।’ জবাবে বোলটন বলেন, ‘ভালো কথা। আমার মনে হয়, ইরানের জনগণ তাদের সরকার বদলাতে চেয়েছে। এ কারণে মাশা আমিনি হত্যাকাণ্ডের পর সেখানে টানা বিক্ষোভ হয়েছিল।’
পাল্টা প্রশ্ন ছিল, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তা, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থেকে শুরু করে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের কোনো পর্যায়েই কি আপনি বিদেশে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত ছিলেন?’
জবাবে বোলটন বলেন, তিনি অনেক সরকারি দায়িত্ব পালন করেছেন। সিএনএনের জ্যাক ট্যাপারের শোতে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তাতে তিনি এখনো অবিচল আছেন। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য যাতে প্রকাশিত না হয় সে জন্য ভেনিজুয়েলায় ভূমিকা নিয়ে আমার বইয়ের পাণ্ডুলিপি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল।’
তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাগুলোর কোনো একটিও কি সফল হয়েছিল?
জবাবে বোলটন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বড় খেলা আছে। আমি জানি, আপনি কী নিয়ে প্রশ্ন করছেন। কিন্তু আমি এ বিষয়ে আর কিছুই বলছি না।’
টিআরটি ওয়ার্ল্ড কিউবা, ভেনিজুয়েলা, ইয়েমেন, লিবিয়া, সিরিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার নাম উল্লেখ করে জানতে চায়, যুক্তরাষ্ট্র কি এই সরকারগুলোকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। বোলটন বলেন, উত্তর কোরিয়ার শুধু দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের অধীন একীভূত হওয়া প্রয়োজন।
পরের প্রশ্ন ছিল, ‘আপনি কি আপনার মনোভাব বদলেছেন? নাকি এখনো মনে করেন, ওই সরকারগুলোর পরিবর্তন হওয়া দরকার?’
জবাবে বোলটন বলেন, লিবিয়ায় এখন সরকার নেই। এটিই এখন সমস্যার অংশ। ইরাকে ক্ষমতার পালাবদলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা সফল হয়েছিল। কিন্তু এরপর সেখানে ইরান মিলিশিয়া গোষ্ঠী সৃষ্টি করে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নিতে চেয়েছে। ইরানই ইরাককে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানিয়েছে।