বিস্ময়কর উত্থান: বাবুর্চি থেকে বিদ্রোহী মিলিটারি কমান্ডার
প্রান্তডেস্ক: প্লেন দুর্ঘটনায় ভাড়াটে যোদ্ধাগোষ্ঠী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ। ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর বাখমুত মুক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল তার সেনারা। তবে তার কিছুদিন পরেই রাশিয়ার ভ্লাদিমির প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন তিনি। ফলে তার মৃত্যুতে সরাসরি পুতিনের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন পশ্চিমা বিশ্লেষকরা। ওয়াগনার ঘনিষ্ঠ একটি চ্যানেলও বলছে, প্লেনটিকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
কে এই প্রিগোজিন
প্রিগোজিনের জন্ম রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে। একই শহরে জন্ম পুতিনেরও। ১৯৭৯ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে প্রথমবার অপরাধী সাব্যস্ত হন প্রিগোজিন। চুরির দায়ে আড়াই বছরের স্থগিত কারাদণ্ড দেয়া হয় তাকে। এর দুই বছর পরেই চুরি ও ডাকাতির মামলায় ১৩ বছর কারাদণ্ড হয় প্রিগোজিনের। এর মধ্যে নয় বছর কারাভোগ করতে হয়েছিল তাকে। কারাভোগ শেষে ব্যবসা শুরু করেন প্রিগোজিন। সেন্ট পিটার্সবার্গে দোকান দিয়ে হট ডগ বিক্রি শুরু করেন তিনি। ব্যবসা বেশ ভালো চলতে শুরু করে।
নব্বইয়ের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে অরাজকতার মধ্যেই শহরটিতে একটি বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ চালু করেন প্রিগোজিন। তখন থেকেই বিত্তবান, ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু হয় তার। রেস্তোরাঁর সূত্রেই পরিচয় হয় পুতিনের সঙ্গে। তখন তিনি শহরটির ডেপুটি মেয়র। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও পুতিন তার বিদেশি অতিথিদের প্রিগোজিনের রেস্তোরাঁয় নিয়ে যেতেন। এভাবে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন প্রিগোজিন। কয়েক বছর পরে তার মালিকানাধীন ক্যাটারিং কোম্পানি কনকর্ড ক্রেমলিনে খাবার সরবরাহের দায়িত্ব পায়। এর মধ্য দিয়ে ‘পুতিনের বাবুর্চি’ বলে পরিচিতি পান প্রিগোজিন। এরপর সামরিক বাহিনী ও সরকারি স্কুলেও খাবার সরবরাহের দায়িত্ব পায় কনকর্ড।
ওয়াগনার বাহিনী কারা?
প্রথমদিকে এই গ্রুপের সৈন্যসংখ্যা ছিল মাত্র পাঁচ হাজার, যাদের অধিকাংশই ছিল বিভিন্ন রেজিমেন্টের সাবেক সৈন্য। তবে ক্রেমলিন নিয়মিত বাহিনীর জন্য লোক পেতে সমস্যায় পড়ার পর ওয়াগনার বাহিনী বড় সংখ্যায় নিয়োগ দিতে শুরু করে। বর্তমানে তাদের সৈন্যসংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি, যার ৮০ শতাংশই এসেছে রাশিয়ার কারাবন্দিদের মধ্য থেকে। সূত্র: বিবিসি।