শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ হলো গাজীপুর সিটির ভোটগ্রহণ, চলছে গণনা
প্রান্তডেস্ক:গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। রাজধানীর পার্শ্ববর্তী এই নগরীর এটি তৃতীয় নির্বাচন। এবার পুরো ভোট ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) গ্রহণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হয় ভোটগ্রহণ। ভোট সুষ্ঠু করতে সবকটি কেন্দ্রেই স্থাপন করা হয়েছিল সিসিটিভি ক্যামেরা।
ভোটগ্রহণের শুরু থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে ইভিএম মেশিনে। প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটগ্রহণ স্বস্তির হলেও দুপুর গড়াতেই দীর্ঘ হয় নারী ভোটারদের সারি।
এরই মধ্যে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি কেন্দ্রে অনিয়ম ধরা পড়ে। দ্রুত সেখানে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। ফুটেজে অনিয়ম দেখা মাত্রই ইসি রাশেদা টেলিফোনে ওই কেন্দ্রে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাকে বলেন, ১০০ নম্বর কেন্দ্রের ৩ নম্বর বুথে পাঞ্জাবি পরা একজন লোক বসে রয়েছেন। তিনি কারও কথাই শুনছেন না। বেরও হচ্ছেন না। এছাড়া ভোটারদের জোর করে ভোট দেওয়াচ্ছেন। এ বিষয়ে দ্রুত অ্যাকশনে যান, প্রয়োজনে তাকে গ্রেপ্তার করুন।
এছাড়া সালনার নাগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই কাউন্সির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রের প্রবেশমুখে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, লাটিম প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী সাইফুল ইসলাম এবং করাত প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. শাহীন আলমের সমর্থকদের মধ্যে এই ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুই কাউন্সিলরই আওয়ামী লীগপন্থী বলে জানা গেছে। নাগা মোক্তারবাড়ি গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, ইভিএমের বোতাম চাপ দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, কোথাও বড় ধরনের কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি। আমরা সকাল থেকে সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ করছি। দু-একটি কেন্দ্রে কিছু সমস্যা হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে পরবর্তীতে তথ্য জানানো হবে।
গাজীপুর সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন মোট ৩৩২ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৮ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করলেও নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতায় কোনো কমতি রাখেনি নির্বাচন কমিশন।
এই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ এরশাদ, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম।
এছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ এবং হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।