প্রান্তডেস্ক: দেশের মানুষ এবার তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। শুক্রবার (১৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে সাইফুল হক বলেন, ‘দেশের মানুষ আরেকবার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন হতে দেবেন না। দেশের মানুষ এবার তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবেন। কারণ আগামী নির্বাচন ব্যর্থ হলে, বাংলাদেশ এটি অকার্যকর ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে।’বাংলাদেশকে ক্রমান্বয়ে ‘বন্ধুহীন’ করে তোলা হচ্ছে মন্তব্য করে সাইফুল বলেন, ‘সমস্ত বন্ধু দেশগুলোকে আপনারা (সরকার) বৈরী শত্রুভাবাপন্ন করে তুলছেন। তারা যদি আজকে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়, আমাদের অর্থনীতি, রফতানি বাণিজ্য ভেঙে পড়বে। তাই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। এই সরকার দেশের মানুষকে একটি ভয়াবহ দুর্যোগের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এই সরকারকে বিদায় করা ছাড়া দেশকে রক্ষা করা যাবে না।’
সাইফুল হক আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, যেসব দেশ বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাদের কাছ থেকে আমরা আর কিছু কিনবো না। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশ থেকে পণ্য কেনা বন্ধ করে দেয়, তাহলে কি সর্বনাশ হবে; এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন, চিন্তিত। আমাদের রফতানি-বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়বে। হাজার হাজার গার্মেন্টস, কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে, লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হবে। এদের দায়িত্ব কি নিতে পারবেন?’
আজ দেশের গরীব, শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষরা ভালো নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা একবেলা খেলে আরেকবেলা কীভাবে খাবে, এর নিশ্চয়তা নেই। তারা যে মজুরি পান, তা দিয়ে এই বাজারে ১৫ দিন চলাও অসম্ভব। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠা হিসাব দিয়েছে, আজকে অতিদরিদ্র, না খাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। শ্রমজীবী-মেতনতি মানুষের পুষ্টিহীনতার সংকট দেখা দিয়েছে। গার্মেন্টস শ্রমিকরা দাবি করছে, নূন্যতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করার। শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষ আজ রাজপথে নেমে আসছে ক্ষুধার তাগিদে। কিন্তু সরকার এতে কর্ণপাত করছে না।’
বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে না অভিযোগ করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘শুধু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে গত কয়েক মাসে ২৫ লাখ মানুষ নতুন করে দারিদ্র সীমার নিচে নেমে এসেছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো যখন এমন তথ্য দিচ্ছে, তখন সরকার প্রতিনিয়ত প্রচার করছে, মানুষ উন্নয়নে আছে, মানুষ বেহেস্তে আছে। বেহেস্তে আছেন সরকারি দলের মন্ত্রী, এমপি ও নেতারা।’
বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রমজীবী নারী মৈত্রীর সভাপতি বিহ্নিশিখা জামালী, খেতমজুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকবর খান, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির প্রস্ততি কমিটির সাবেক আহ্বায়ক আবু হাসান টিপু, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম ফয়েজ হোসেন, বিপ্লবী কৃষক শ্রমিক সংহতির সভাপতি আনছার আলী দুলাল প্রমুখ।